টাটাদের প্রকল্প এলাকার একাংশ এখন আগাছায় ভর্তি। নিজস্ব চিত্র।
ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে সিঙ্গুরের জমি নিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। প্রায় ৭০০ একর জমি কৃষিযোগ্য কিংবা শিল্প গড়ার উপযোগী করে দিতে হবে সরকারকে— এই মর্মে পুজোর পর থেকে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চলেছে নবগঠিত ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটি’। ওই অংশেই টাটাদের প্রস্তাবিত ন্যানো কারখানা গড়ে ওঠার কথা ছিল। বর্তমানে যা কার্যত জলা-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। গত সপ্তাহে সোসাইটি আইনে নথিভুক্ত হওয়ার পরে বন্ধ্যা জমি কমিটি এ বার জনসভা করার তোড়জোড় শুরু করেছে। অগস্টেও এই দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিল তারা।
কমিটির সচিব দুধকুমার ধাড়া জানান, দুর্গা পুজোর পরে আন্দোলনের জোর বাড়ানো হবে। এ মাসের মাঝামাঝি সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি বাজারে বড় সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা আছে। কমিটি জমিদাতা কৃষক ও সাধারণ মানুষের সাহায্যের লক্ষ্যে বিবিধ কাজও করবে। তিনি বলেন, ‘‘সভায় সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের সময় যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের সকলকেই ডাকব। এর মধ্যে মেধা পাটকর ও সিঙ্গুরের চার বারের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’’
দুধকুমার সোমবার জানিয়েছেন, জমি ফেরতের দাবিতে সব জমিদাতা কৃষকদের শিবির করে ফর্ম বিলি করা হয়েছে। ঠিক কত জমি এখনও চাষ বা শিল্পযোগ্য হয়নি, তার হিসেব এই ফর্ম মারফত কমিটির কাছে ফিরে এলেই পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পরিচিত মুখ দুধকুমার বলেন, ‘‘পুজোর পরে জমির হিসাব পেলে বিষয়টি নিয়ে ফের রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।’’ জমি নিয়ে আন্দোলন করায় তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই কমিটির সভাপতি সিঙ্গুরের কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আর এক পরিচিত মুখ মহাদেব দাস।
জমিদাতা চাষিদের মত, যেহেতু কারখানার ৯৯৭ একর জমির ৯৫% জুড়েই নির্মাণের কাজ হয়ে গিয়েছিল। তাই চাইলেও তার পুরোটা চাষযোগ্য করা সম্ভব নয়। ফলে এই জট সহজে খোলার নয়। সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুনর্বব্যহার কমিটি-র হিসাবে এ রকম পড়ে থাকা জমি ৬৫০-৭০০ একর।