অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। ফাইল চিত্র।
মাঝে ব্যবধান প্রায় মাস তিনেকের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পরে এ বার মূলধনী খাতে বেসরকারি লগ্নি বাড়াতে হবে বলে স্পষ্ট বার্তা দিলেন অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনও। তাঁর দাবি, গত এক দশকে যে হারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ চালিয়েছে সরকার, তা আগামী দিনেও বজায় রাখা সম্ভব নয়। ফলে দেশকে আর্থিক দিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এ বার এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি শিল্পকে।
পরিসংখ্যান বলছে, দেশে কেন্দ্র, রাজ্য সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি মিলিয়ে গত ১০ বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ। টাকার অঙ্কে তা ৬.৮ লক্ষ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ২১.২ লক্ষ কোটি। বণিকসভা সিআইআইয়ের বিশ্বের আর্থিক নীতি সংক্রান্ত এক সভায় আজ সেই সূত্রে বেসরকারি লগ্নি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন নাগেশ্বরন।
বস্তুত, এত দিন সরকার কর্পোরেট ও ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের পাশে থেকে পুঁজি ঢালার যে বাড়তি দায়িত্ব পালন করেছে, এ বার বেসরকারি ক্ষেত্রকে সেই দায়িত্ব নেওয়ার বার্তাই দিয়েছেন উপদেষ্টা। তাঁর কথায়, ‘‘যখন আর্থিক নয় এমন কর্পোরেট ও ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র তাদের হিসাবের খাতা (ব্যালান্স শিট) ঠিক করছিল, তখন সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র দেশের আর্থিক বৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হাল ধরে।’’ কিন্তু সেটাই চলবে, নাকি লগ্নিতে বেসরকারিক্ষেত্র অর্থনীতির ইঞ্জিন হবে, তা ভেবে দেখা জরুরি বলে মত তাঁর।
নাগেশ্বরনের বক্তব্য, কর্পোরেট সংস্থাগুলির আর্থিক হাল এখন যথেষ্ট ভাল। তারা মুনাফাও করছে। ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলি হিসাবের খাতা মেরামত করে ঋণ দিতে প্রস্তুত। এই পরিস্থিতিতে সরকারের আগের মতো একই গতিতে লগ্নি করা যেমন জরুরি না-ও হতে পারে, তেমনই দেশের আর্থিক স্বাস্থ্যের পক্ষেও তা ঠিক নয়। অবশ্য তিনি জানান, কেন্দ্র পুরো হাত গুটিয়ে নেবে, তা নয়। তবে সরকারি লগ্নির গতি কমা ও বেসরকারি লগ্নির গতি বৃদ্ধি বাঞ্ছনীয়। আর সব মিলিয়ে জরুরি মূলধনী খাতে লগ্নি বৃদ্ধি।
সেপ্টেম্বরে নির্মলা দাবি করেন, বিদেশি লগ্নিকারীরা উৎসাহ দেখাচ্ছেন ভারতে বিনিয়োগে। দেশের শিল্প মহল কেন পিছপা, তা জানতে চান তিনি।