ছবি এএফপি।
সোনা, রুপোর দামের দৌড় অব্যাহত। মঙ্গলবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট পাকা সোনা জিএসটি-সহ ৫৬,৩১০ টাকা ছুঁয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বুধবার লকডাউনের জন্য এই শহরে সোনার বাজার বন্ধ ছিল। তবে দিল্লিতে ১৩৬৫ টাকা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৫৭,৮৬৬ টাকা। প্রতি কিলোগ্রাম রুপোর বাট রাজধানীতে বেড়েছে ৫৯৭২ টাকা। জিএসটি ধরলে ৭৪,৮৯৩। মঙ্গলবার কলকাতায় তা ছিল ৬৭,০৩২ টাকা।
বিশ্ব বাজারে নজিরবিহীন ভাবে সোনা পৌঁছেছে আউন্স পিছু ২০০০ ডলারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী ১৮ মাসে তা দাঁড়াবে ৩০০০ ডলার।
তাঁদের অনেকেই বলছেন, করোনা ভারত-সহ সারা বিশ্বের অর্থনীতিকে সঙ্কটের খাদে ঠেলে দিয়েছে। ফলে শেয়ার বাজার মাঝে-মধ্যে বেশ খানিকটা করে উঠলেও, আখেরে অনিশ্চিতই। ফান্ডের লগ্নিতে ঝুঁকি বেড়েছে। ডলারও আগের থেকে দুর্বল। তার উপরে ব্যাঙ্কে সুদ নেমেছে তলানিতে। অনেক দেশে তলিয়েছে শূন্যের নীচে। ফলে তুলনায় সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে সোনা কিনছেন বহু লগ্নিকারী। একাংশ রুপোয় বাজি ধরছেন। রকেটের গতিতে বাড়ছে দাম।
সূত্রের খবর, সোনা কিনতে ঝাঁপিয়েছে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কও। তা ছাড়া, কোভিড মোকাবিলায় প্রায় সব দেশ বাজারে নগদের জোগান দ্রুত বাড়িয়েছে। তার বড় অংশও সোনা এবং রুপোর বাজারে লগ্নি হচ্ছে।
এ দেশে সোনায় লগ্নিকারীদের অনেকেই ইতিমধ্যে ৪০-৫০ শতাংশ লাভ পকেটে পুরেছেন। যা লগ্নির ক্ষেত্র হিসাবে এর কদর আরও বাড়িয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, যে করোনার আবহে সোনার বাজার এত চড়া, তার টিকা বাজারে চলে এলে ছবিটা উল্টে যাবে কি?
ভারতে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের এমডি সোমসুন্দরম পিআর বলেন, “আমরা সোনার দামের ওঠানামা নিয়ে পূর্বাভাস দিই না। তবে অতীতে চোখ রাখলে দেখা যায়, দাম যত দ্রুত বেড়েছে, পড়েছে তার থেকে অনেক ধীর গতিতে। শেষ পর্যন্ত থেকেছে উপরের দিকেই।’’ তাঁর দাবি, ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার ঠিক আগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনা ছিল ৯০০ ডলার। মন্দার পরে চড়ে ১৯০০ ডলারে। পরে তা ধীরে ধীরে নেমে হয় ১২০০ ডলার। এখন ফের দাম ছাড়িয়েছে ২০০০ ডলার। সোমসুন্দরমের মতে, অনেক কিছু নির্ভর করবে করোনা চলে যাওয়ার পরে বিশ্ব অর্থনীতি কোন দিকে মোড় নেয় তার উপর।
একই মত কলকাতার সোনা আমদানিকারী সংস্থা জে জে গোল্ডের এমডি হর্ষদ আজমেরার। তিনি বলেন, “টিকা বেরোলে দাম হয়তা প্রাথমিক ভাবে এক ঝটকায় কিছুটা কমবে। কিন্তু পরে ফের বাড়বে।’’