ছবি সংগৃহীত।
নতুন বছর শুরু হল রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের (১৯ কেজি) দাম বৃদ্ধি দিয়ে। সাত মাস পরে চড়ল হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহারের এই জ্বালানি। এর মধ্যে বরং কয়েক দফা কমানো হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য দাবি, আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। গুজরাত-হিমাচলপ্রদেশের ভোট মিটতেই বেড়েছে বাণিজ্যিক গ্যাসের দর। এই দফায় গৃহস্থের ব্যবহারের গ্যাস সিলিন্ডার বাড়েনি। তবে একাংশের মতে, ভোট পেরোতেই দর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়াবে। আজ থেকে কলকাতায় বাণিজ্যিক সিলিন্ডার ২৪ টাকা বেড়ে হল ১৮৬৯.৫০ টাকা। গৃহস্থের গ্যাস (১৪.২ কেজি) থাকছে ১০৭৯ টাকাই।
তেল সংস্থা সূত্রের অবশ্য দাবি, এলপিজি-র উপাদানের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে শীতে বরাবরই গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য দর বাড়ে। ফলে তেল সংস্থাগুলির খরচ বেড়েছে। অন্য দিকে, সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ মনে করাচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাতও বিশ্ব বাজারে গ্যাস নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। পাশাপাশি অশোধিত তেলের দর বৃদ্ধির জেরে সংস্থাগুলির আর্থিক বোঝাও বেড়েছে।
তেল, গ্যাসের মতো অত্যাবশ্যক জ্বালানির চড়া দর মূল্যবৃদ্ধির হারকে ঠেলে তুলেছে বলে অভিযোগ। মোদী সরকার বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দরকে এ জন্য দায়ী করে। বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলেছে, সেই দাম নীচে নামলেও, দেশে তেলের দরে প্রভাব পড়েনি। এমনকি করোনার মধ্যে আমজনতার সুরাহা মেলেনি চড়া জ্বালানির ছেঁকা থেকে।
এ দিকে, মাসের শেষ দিনে পরের মাসের গ্যাসের দাম সংশোধনের রেওয়াজ বরাবরের। কিন্তু গত ক’বছরে মোদী সরকারের আমলে মাঝ মাসেও দর বদলেছে তেল সংস্থাগুলি। যেমন, মে মাসের প্রথম দিনে গৃহস্থের সিলিন্ডার না-বাড়লেও বাণিজ্যিকের দাম বেড়েছিল ১০০ টাকারও বেশি। তবে সেই স্বস্তি বেশি দিন থাকেনি। সাত দিন পরই এক লাফে ৫০ টাকা দামি হয় গৃহস্থের সিলিন্ডার। দর ছাড়ায় ১০০০ টাকা। ফের বাড়ে বাণিজ্যিক সিলিন্ডারও। সে মাসেই আরও এক দফা দাম বাড়ে গ্যাসের। এর পর থেকে বাণিজ্যিকের দাম কমলেও জুলাইয়ের মাঝামাঝি দামি হয় গৃহস্থের সিলিন্ডার। তখন থেকেই এখনও পর্যন্ত তা স্থির।
মাঝে অশোধিত তেল বাড়লেও, দেশে গ্যাসের দাম চড়েনি। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভোটের দিকে তাকিয়ে তেল সংস্থাগুলিকে দর বৃদ্ধিতে সায় দেয়নি কেন্দ্র। ভোট মিটলেই বাড়বে। এখন দেখার নতুন বছরে গৃহস্থের জ্বালানির খরচ ফের চড়ে কি না।