ক’দিন পরেই সম্মেলন। আসার কথা দেশ-বিদেশের শিল্পপতিদের। সাজছে কনভেনশন সেন্টার। নিজস্ব চিত্র
কয়েক মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এ বছর রাজ্যের শিল্প সম্মেলন হবে দিঘায়। সেই দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ১১ এবং ১২ ডিসেম্বর ওই সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতো এক সপ্তাহ আগে থেকে সৈকত শহর দিঘা-সহ আশেপাশের এলাকা সাজিয়ে তোলার জন্য এখন চরম ব্যস্ত জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দিঘায় সৈকতাবাসের পাশে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নবনির্মিত অতিথি নিবাসে এবার মুখ্যমন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া, শিল্পপতি এবং রাজ্য সরকারের অন্য আধিকারিকদের থাকার জন্য সরকারি অতিথি নিবাসগুলিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। শিল্প সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নিউ দিঘার কনভেনশন সেন্টারে। যা গত ২০ অগস্ট প্রশাসনিক সফরে এসে উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কনভেনশন সেন্টারে রাজ্য এবং গোটা দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকী, কয়েকজন বিদেশি বিনিয়োগকারীও সম্মেলনে আসতে পারেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। তাই এখন থেকেই নব নির্মিত কনভেনশন সেন্টার ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কনভেনশন সেন্টারের বাইরের এলাকাজুড়ে অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করা হচ্ছে। সেন্টারের ভিতরেও শেষ মুহূর্তের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজকর্ম চলছে।
শহর লাগোয়া রামনগর এলাকায়ও সাজানো হচ্ছে। জাতীয় সড়কের দু’পাশে গাছে বা বিদ্যুতের খুঁটিতে যেসব বিজ্ঞাপনের হোডিং টাঙানো হয়েছিল, সব খুলে দিচ্ছে পুলিশ। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার জন্য প্রতি মুহূর্তে দিঘায় যাচ্ছেন কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য। সৈকত শহর জুড়ে অন্য সমস্ত কাজকর্ম ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক নিজে তদারকি করছেন।
জেলা প্রশাসন ও ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ’ সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে দিঘার সৈকত ছাড়াও শহর জুড়ে রাস্তার দু’ধারে যত অবৈধ নির্মাণ ছিল, সব ভেঙে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য দিঘার প্রবেশদ্বার থেকে সবক’টি উদ্যান পরিষ্কার এবং রং করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি বাংলো নতুন করে রং করার পাশাপাশি ১১৬ বি জাতীয় সড়ক জুড়ে থাকা সমস্ত সেতুর সংস্কারের কাজও চলছে জোর কদমে।
‘বিজনেস কনক্লেভ’ নামে এবারের শিল্প সম্মেলনের মূল দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন নিয়ম। ওই সম্মেলনে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। যদিও দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুরের মতো পর্যটন কেন্দ্র এবং হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় নতুন বিনিয়োগের জোয়ার আনার জন্য জেলায় রাজ্য সম্মেলন করা হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছে। তাই শিল্প সম্মেলন সফল করার জন্য সকলে এ ভাবে কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘শিল্প সম্মেলনে যে সব শিল্পপতিরা আসবেন, তাঁরা যাতে আমাদের জেলা সম্পর্কে অত্যন্ত ভাল ধারণা নিয়ে ফিরতে পারেন, তার চেষ্টা করা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর-সহ গোটা রাজ্যে যাতে আগের তুলনায় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ে, তার জন্য আমরা সৈকত শহর-সহ গোটা জেলাকে ঢেলে সাজাচ্ছি।’’