কারখানাটি চালু হলে সরাসরি কাজ পাবেন ১০০ জন। পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এক হাজারেরও বেশি। —প্রতীকী চিত্র।
রাজ্য এখন দিন গুনছে পাইপলাইন দিয়ে তুলনায় সস্তা প্রাকৃতিক গ্যাস আসার অপেক্ষায়। যা পাইপ দিয়ে গৃহস্থের হেঁশেলে পৌঁছে যাবে রান্নার গ্যাস (পিএনজি) হিসেবে। মিলবে হোটেল-রেস্তরাঁয় এবং উৎপাদনের কাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সংস্থায়। সিএনজি হিসেবে বিকোবে গাড়ির জন্যও। মূল পাইপলাইন থেকে গৃহস্থের রান্নাঘরের মতো জায়গায় যে পাইপ দিয়ে গ্যাস জোগানো হবে, তা তৈরি করতেই এ বার হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে কারখানা গড়বে করণ পলিমার। সংস্থা জানিয়েছে, এই পলিথেলিন পাইপ তৈরির জন্য ১০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে তারা। কারখানাটি চালু হলে সরাসরি কাজ পাবেন ১০০ জন। পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এক হাজারেরও বেশি।
সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্যামলাল আগরওয়াল জানান, পণ্যের মান অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যেই বুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের (বিআইএস) কাছে নমুনা পাঠিয়েছেন তাঁরা। আশা, মাস চারেকের মধ্যে চূড়ান্ত সায় মিলবে। তার পরে কারখানা গড়ার কাজে হাত দেবে সংস্থা। আগামী বছরের শেষ দিকে উৎপাদন শুরুর লক্ষ্য।
করণ পলিমার এখন জলের পাইপ তৈরি করে। শ্যামলাল জানান, হাওড়ার রানিহাটি-আমতা রুটে তাদের বর্তমান কারখানার লাগোয়া জমিতেই প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পাইপ তৈরির প্রস্তাবিত কারখানাটি হবে। তবে সে জন্য আরও প্রায় চার একর জমি অধিগ্রহণ করবেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘আইওসি এবং গেল প্রাকৃতিক রান্নার গ্যাস সরবরাহের যে পরিকল্পনা করেছে, আমরা তার সঙ্গেই যুক্ত হচ্ছি। গ্যাস দিতে যে মিডিয়াম ডেনসিটি পলিথেলিন (এমডিপিই) পাইপ ব্যবহার করা হবে, আমরা সেটা তৈরি করব। নতুন প্রকল্পে গ্যাস পাইপ তৈরির পাশাপাশি একটি গবেষণা ও উন্নয়নের কেন্দ্রও চালু করা হবে। ১০০ কোটি টাকা খরচ করে আমরা যে কারখানাটি গড়ব, তাতে সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ কর্মসংস্থান হবে। সরাসরি কাজ পাবেন ১০০ জন।’’
প্রথম পর্যায়ে কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে গ্যাস জোগানোর পরিষেবা চালুর সময়সীমা একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। এই এলাকায় সরবরাহের দায়িত্বে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। গ্যাসের মূল পাইপলাইন বসবে জগদীশপুর (উত্তরপ্রদেশ) থেকে হলদিয়া। প্রকল্পটির নাম উর্জা গঙ্গা।
সূত্রের খবর, মূল পাইপলাইন নদিয়ার গয়েশপুর পর্যন্ত বসেছে। কিন্তু তার পর প্রশাসনিক জটিলতা, জমির সমস্যা-সহ নানা কারণে কাজ আটকে। এই নিয়ে গেল কর্তারা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। কবে পাইপলাইন বসানো শেষ হবে, তা নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। কাজ শেষ হলে বাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ওই গ্যাস পৌঁছতে পাইপ বসানোর পরিকাঠামো তৈরি হবে। সূত্রের খবর, পুরো কাজ শেষ করে পাইপে বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা শুরু করতে গড়িয়ে যেতে পারে আরও বছর খানেক।