প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে এখনও তেল কিনছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ বিভিন্ন দেশ। কিন্তু চলতি সপ্তাহেই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসতে পারে তারা। এই খবরে অশোধিত তেলের জোগান ঘিরে নতুন উদ্বেগ তৈরি হওয়ায়, সোমবার বিশ্ব বাজারে পণ্যটির দাম ফের মাথা তুলতে থাকে। একটা সময়ে ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দর পেরোয় ১১৬ ডলার। যার বিরূপ প্রভাব পড়ে ভারতীয় শেয়ার বাজারেও। তবে এ দিন সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে তেলের জোগান নিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী।
ইউক্রেনের উপরে হামলার জন্য বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল রফতানিকারী দেশ রাশিয়ার উপরে বিভিন্ন আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। এর ফলে অশোধিত তেলের সরবরাহ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দর ১৩৭ ডলারে পৌঁছে যায়। যদিও তেল সরবরাহ বাড়ানোর ব্যাপারে সৌদি আরবের আশ্বাসে সেই আশঙ্কা কিছুটা প্রশমিত হয়ে তা ১০০ ডলারে নামে। কিন্তু এ বার তেলের জোগান ঘিরে ফের আশঙ্কা মাথা তুলল।
• দেশে দৈনিক তেলের চাহিদা ৫০ লক্ষ ব্যারেল।
• ৬০% উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমদানি হয়।
• গত অর্থবর্ষে আমেরিকা থেকে এসেছে ১.৪ কোটি টন (৭.৩%)। তা বেড়ে ১.৬৮ কোটি টন হবে।
• গত এপ্রিল-জানুয়ারি রাশিয়া থেকে এসেছে ৪.১৯ লক্ষ টন (০.২%)।
• ভারতের তেল সংস্থাগুলি রাশিয়ায় ১৬০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে। সুফলও মিলছে। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অবস্থার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
• তেল কেনার ব্যাপারে যে সমস্ত চুক্তি রয়েছে, তার উপরে এখনই বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা নেই।
আজ অবশ্য রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে পুরী জানান, গত এপ্রিল-জানুয়ারি রাশিয়া থেকে ভারত যে তেল আমদানি করেছে তা দেশের মোট চাহিদার মাত্র ০.২%। আমেরিকা থেকে আমদানি বাড়ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতের দিনে ৫০ লক্ষ ব্যারেল তেলের লাগে। এর ৬০% আসে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে। রাশিয়া থেকে আমদানি করেছি মাত্র ৪.১৯ লক্ষ টন। অর্থাৎ, মোট চাহিদার ০.২%। ...অবস্থার দিকে নজর রাখছি। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ব্যাপারে যে আশঙ্কা সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, বাস্তব ঘটনা তার উল্টো। সেখান থেকে আমরা যৎসামান্য তেল কিনি।’’ উল্লেখ্য, দেশে জ্বালানির চাহিদার ৮৫% আমদানি করতে হয় ভারতকে। পুরী জানান, এখন আমেরিকা থেকে ৭.৩% তেল আমদানি হয়। তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ দিন শুরুতে ভারতীয় শেয়ার বাজার মাথা তুলেও তেলের দাম বৃদ্ধির খবর টেনে নামিয়েছে তাকে। ৫৭১.৪৪ পয়েন্ট পড়ে ৫৭,২৯২.৪৯ পয়েন্টে থেমেছে সেনসেক্স। নিফ্টি ১৬৯.৮৫ অঙ্ক নেমে হয়েছে ১৭,১১৭.৬০।