হরদীপ সিংহ পুরী। —ফাইল চিত্র।
ভোটের মুখে সম্প্রতি রান্নার গ্যাসের দাম ১০০ টাকা কমিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু প্রায় দু’বছর ধরে (২২ মাস) তেল চড়া এবং স্থির। পেট্রলের লিটার ১০০ টাকার উপরে। ডিজ়েল ৯০-এর বেশি। আসন্ন ভোটের আবহে তাতেও সুরাহা মিলবে কি না, এই প্রশ্নের মধ্যেই বুধবার কলকাতায় দাঁড়িয়ে তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এই দায় বিশ্ব বাজার এবং তেল সংস্থাগুলির দিকে ঠেলে দিলেন। নির্বাচনে সুবিধা পেতেই তেল-গ্যাসের দাম কমায় এই সরকার, বিরোধীদের এই অভিযোগও ওড়ালেন। বললেন, তাঁরা ভোটের কথা মাখায় রেখে দাম কমান না। দরিদ্ররাই শুধু রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি পাবেন বলেও জানান পুরী। ফলে চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে বেড়ে যাওয়া সংসার খরচে বিপাকে পড়া বহু স্বল্প রোজগেরে মানুষ যখন গ্যাসে সরকারি ভর্তুকির দাবি তুলছেন, তখন ভবিষ্যতে সেই খাতে বর্তমানের সামান্য টাকাটুকুও আর মিলবে কি না, প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতায় এখন এই ভর্তুকি ১৯.৫৭ টাকা। কোনও কোনও জায়গায় অবশ্য ইতিমধ্যেই উধাও।
শহরে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের সভায় বিকশিত ভারত নিয়ে আলোচনার প্রধান বক্তা ছিলেন পুরী। মোদী জমানায় দেশের অগ্রগতি দাবি করে সেখানেই তিনি জানান, বিশ্ব বাজার অস্থির হলেও দু’বছরে প্রধানমন্ত্রী শুল্ক কমানোয় পেট্রলের দাম কমে লিটারে ১৩ টাকা ও ডিজ়েলে ১৬ টাকা। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি ভ্যাট কমিয়ে আমজনতাকে
সুরাহা দিয়েছে।
পরে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভোটের আগে কি তেলের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ভোটের কথা মাথায় রেখে দাম কমাই না। আগে যখন দু’বার কমানো হয়েছিল, ভোট ছিল না। অশোধিত তেলের ৮৫% ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ৫৫% পর্যন্ত আমদানি করতে হয়। ফলে সেই সিদ্ধান্ত নেবে তেল সংস্থা। গত তিনটি ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-ডিসেম্বর) তাদের আর্থিক ফল ভাল হয়েছে। কিন্তু লোহিত সাগরে অস্থিরতা, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে পরিবহণ ও বিমার খরচ বাড়ছে।’’ যদিও ক’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই টুইট করে গৃহস্থের এলপিজি সিলিন্ডারের (১৪.২ কেজি) দাম কমানোর কথা জানিয়েছেন।
রান্নার গ্যাসে ইউপিএ জমানার চড়া ভর্তুকিকে কটাক্ষ করে এ দিন পুরীর বার্তা, পূর্বতন সরকারগুলির ভর্তুকির অপচয় রুখে এবং আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা গ্রাহকদের তা দিয়ে তাঁদের আমলে দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের গ্রাহক বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ১.৩০ কোটি স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ছেড়েছেন। আবার ১.২৫ কোটি গ্রাহকের বাড়িতে এলপিজি-র চেয়েও ২৫% সস্তা পাইপে প্রাকৃতিক গ্যাস যাচ্ছে। আগে তা পেতেন মাত্র ২৫ লক্ষ জন।