প্রতীকী ছবি।
বাড়তে থাকা সংক্রমণের আবহে যখন অক্সিজেন, ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার অভাবে দেশ জুড়ে হাহাকার, তখন নিঃশব্দে প্রায় লাগাতার বাড়ছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। গত ২ মে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল বেরোনোর ঠিক পর থেকেই। ৪ মে থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ১১ দিনের মধ্যে আট দিনই বেড়ে জ্বালানি দু’টির দর এখন রেকর্ড উচ্চতায়। ফলে সাঁড়াশি চাপে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। শনিবার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি দাম স্থির রাখলেও, স্বস্তি উধাও। পেট্রল লিটার পিছু ১০৩.২৭ টাকা ছুঁয়ে দেশের মধ্যে সব থেকে চড়া রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগরে। ডিজেল তা-ই, ৯৫.৭০ টাকা। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের আরও বহু জায়গায় ১০০ পেরিয়েছে পেট্রল।
কলকাতায় পেট্রলের দর ১০০ টাকা হয়নি ঠিকই। তবে শুক্রবার সে দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। ২৮ পয়সা বেড়ে আইওসি-র পাম্পে তা বিকিয়েছে ৯২.৪৪ টাকায়। ৮৫.৭৯ টাকায় ডিজেল। আরও ৩৪ পয়সা বেশি। ভোটের পর থেকে আট দিনে পেট্রলের মোট বৃদ্ধি ১.৮২ টাকা, ডিজেলের ২.১৮ টাকা। আশঙ্কা, এ ভাবে নাগাড়ে বাড়তে থাকলে রাজ্যেও পেট্রলের ১০০ টাকা হওয়া সময়ের অপেক্ষা।
কেন্দ্র আগেও দাবি করেছে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বাড়ছে বলেই দাম বাড়াচ্ছে তেল সংস্থাগুলি। তবে বিরোধীদের কটাক্ষ, ২০১৪-এর মতো এখনও তা ব্যারেলে ১০৫ ডলার ছোঁয়নি। ঘুরছে ৬৮ ডলারের আশেপাশে। তাতেই পেট্রল ১০০ পার।
মোদী জমানায় অশোধিত তেল সত্যিই ১০০ টাকা পেরোলে পেট্রল-ডিজেল কোথায় পৌঁছবে বোঝা যাচ্ছে না। ক্ষুব্ধ জনতার প্রশ্ন, তেল থেকে যে বিপুল উৎপাদন শুল্কে সরকার রাজকোষ ভরছে তা কমিয়ে সুরাহা দেওয়া যায় না কি? কারণ, এর জেরে যাতায়াত ও বাজারের খরচ বাড়লে ভুগবেন এমন বহু মানুষ, অতিমারি যাঁদের রুজি কেড়েছে বা বেতন কমিয়েছে কিংবা কেড়েছে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তিকে। তেলের খরচ বাড়ায় ইতিমধ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাক মালিকেরা।
তথ্য বলছে, তেলের দরের উচ্চতার নিরিখে এক নম্বরে থাকা রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে দেশের মধ্যে ভ্যাট সব থেকে চড়া। কিন্তু বিরোধীরা মনে করাচ্ছে, মোদী সরকারের সাত বছরে পেট্রলে প্রায় ২৫০% শুল্ক বেড়েছে। আর ডিজেলে ৮০০%।