Per Capita Income

Per capita Income: মাথা পিছু আয় বৃদ্ধিতে সাফল্যের দাবি রাজ্যের

আরবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ২০১১-১২ সালের বাজার দরের ভিত্তিতে কোভিড হানার ঠিক আগের বছরে (২০১৯-২০) পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মাথা পিছু আয় ছিল ৭১,৭১৯ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা হানার বছরে অধিকাংশ রাজ্যেরই মাথা পিছু আয় কমেছে। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে তা সামান্য হারে হলেও বেড়েছে। রাজ্যের দাবি, এটা তাদের সাফল্য। আর বিরোধীরা এই তথ্যের বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

আরবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ২০১১-১২ সালের বাজার দরের ভিত্তিতে কোভিড হানার ঠিক আগের বছরে (২০১৯-২০) পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মাথা পিছু আয় ছিল ৭১,৭১৯ টাকা। পরের বছরে (২০২০-২১) তা-ই বেড়ে হয়েছে ৭২,২০২ টাকা। আজ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, ‘‘রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে ২০২০-২১ সালে মাথা পিছু আয় বৃদ্ধিতে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম স্থানে রয়েছে। সাবাশ! পশ্চিমবঙ্গে তার বৃদ্ধি ৭.১৬%। যেখানে ভারতের গড় মাথা পিছু আয় ৩.৯৯% কমেছে।’’ অমিতবাবুরর বক্তব্য, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের তুলনায় নরেন্দ্র মোদীর ব্যর্থতার ছবি। তবে বিরোধীরা বলছেন, মাথা পিছু আয় কোভিডের বছরেও বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু রাজ্যের অর্থমন্ত্রী যে পরিমাণ বেড়েছে বলে দাবি করছেন, ততখানি বাড়েনি। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, অর্থমন্ত্রী বর্তমান বাজার দরের ভিত্তিতে, মূল্যবৃদ্ধি-সহ আয় কতখানি বেড়েছে, তার হিসেব করছেন। মূল্যবৃদ্ধি বাদে তা সামান্যই বেড়েছে। মাত্র ০.৬৭%। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যের মানুষের আর্থিক অবস্থা এত ভাল হলে ৮ কোটি মানুষকে ২ টাকা দরে চাল নিতে হত না। গ্রামে একশো দিনের কাজের চাহিদাতেও পশ্চিমবঙ্গ সকলের আগে থাকত না।’’

অমিতবাবু অবশ্য বলছেন, শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানই দেখিয়েছে কোভিডের বছরে ১১টি রাজ্যের মাথা পিছু আয় কমেছে। পশ্চিমবঙ্গের শুধু তা বাড়েনি, রাজ্যগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি হারে বেড়েছে। তিনি মনে করাচ্ছেন, রাজ্য নয়, শীর্ষ ব্যাঙ্ক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্যের ভিত্তিতেই।

Advertisement

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ কথা ঠিক যে রিপোর্টটি তৈরি কেন্দ্রীয় তথ্যের ভিত্তিতেই। কিন্তু পরিসংখ্যান দফতর রাজ্যের মোট উৎপাদন বা এসডিপি (স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) হিসেবের ক্ষেত্রে রাজ্যের পরিসংখ্যানেই নির্ভর করে। এই নিট এসডিপি-কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথা পিছু আয় আঁচ করা যায়। রাজ্যের পরিসংখ্যান কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সেটাই প্রশ্ন।

বামপন্থী অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিৎ বসুর বক্তব্য, কেন্দ্রের জিডিপি পরিমাপ নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে, তেমনই আছে রাজ্যের এসডিপি-র হিসাব নিয়েও। অর্থনীতির অবস্থা দেশের মতো রাজ্যেও খারাপ। কোনও সরকারই হাল শোধরানোর মতো পদক্ষেপ করছে না। অধিকাংশ রাজ্যে যেখানে মাথা পিছু আয় কমেছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের সামান্য হলেও বাড়ল কী ভাবে? প্রসেনজিতের উত্তর, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ মূলত কৃষি নির্ভর। কোভিড-লকডাউনের ধাক্কা কৃষিতেই সব থেকে কম লেগেছে। ফলে ০.৬৭% বৃদ্ধি হয়েছে। তবে এটুকু কার্যত বৃদ্ধি না-হওয়ারই সমান। খুব বেশি হলে বলা যায় যে, আয় কমার সঙ্কট এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু সেটা যে সরকারি পদক্ষেপের অবদান, তার প্রমাণ কোথায়?’’

অমিতবাবুর যুক্তি, রাজ্য মানুষের হাতে টাকা দিয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার-এর মতো প্রকল্প এনেছে। গরিব মানুষ সেই টাকা খরচ করেছেন। পরিকাঠামো খরচেও জোর দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চাহিদা বেড়েছে। মানুষের আয় বেড়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, লক্ষ্মীর ভান্ডার তো এ বছর চালু হয়েছে। তার ফল আগামী বছর বোঝা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement