—প্রতীকী চিত্র।
ভারতে ঋণের চাহিদা মেটানো হয় প্রধানত গৃহস্থের সঞ্চয় থেকে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ যে টাকা ব্যাঙ্কে বা অন্যান্য আর্থিক সংস্থায় জমা রাখেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধার হিসেবে তা-ই বণ্টিত হয়। মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এই কথা জানিয়েই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্রের আশ্বাস, মাঝে গৃহস্থের সেই সঞ্চয়কে কমতে দেখা গেলেও, ফের বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ব্যাঙ্কে আমানত কমা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন পরিসংখ্যান প্রকাশের পরে ঋণ পাওয়া কঠিন হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। এতে আর্থিক বৃদ্ধি থমকে যাবে কি না, মাথা তুলছে সেই প্রশ্নও। এই অবস্থায় পাত্রের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ।
আজ বণিকসভা সিআইআইয়ের মঞ্চ থেকে পাত্র জানান, ২০২০-২১ সালের তুলনায় গৃহস্থের সঞ্চয় অর্ধেক হয়েছিল। কারণ, করোনার সময় মানুষ নগদ টাকা জমাচ্ছিলেন। কোভিড কাটার পরে তাঁদের বড় অংশের ঝোঁক বাড়তে থাকে জমি-বাড়ি সম্পদে সঞ্চয় করার। তবে সম্প্রতি ফের ব্যাঙ্ক জমায় আগ্রহ বাড়ছে দাবি করে তাঁর বার্তা, গৃহস্থের সঞ্চয়ের টাকাকে ঋণ দিতে ব্যবহার করার ছবি বদলাবে না। কারণ, ফের মানুষের আয় বাড়ছে। যার হাত ধরে আমানতও আগামী দিনে আগের মতোই মাথা তুলবে। পাত্রের বক্তব্য, ২০১১-২০১৭ সালে গৃহস্থের নগদ সঞ্চয়ের হার ছিল দেশের জিডিপির ১০.৬%। ২০১৭-২০২৩ সালের (করোনার বছর ছাড়া) মধ্যে তা হয়েছে ১১.৫%। তবে নগদের তুলনায় অন্য সম্পদে সঞ্চয় বৃদ্ধির হার বেশি। জিডিপির ১২ শতাংশেরও বেশি।
বেসরকারি ক্ষেত্রে অবশ্য ঋণের চাহিদা কমেছে বলে দাবি পাত্রের। কারণ সংস্থাগুলির সঞ্চয় বৃদ্ধি ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির হারে টান। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে শিল্পের লগ্নি বৃদ্ধি ধরে এই অংশে ঋণের চাহিদা আবার বাড়বে বলে আশা তাঁর। ইঙ্গিত, তাতে কেন্দ্রের বিশেষ ভূমিকা থাকবে। পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক ক্ষেত্র, অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নতুন ধরণের পণ্য তৈরি এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থার উন্নতির জন্য খরচ মেটাতেই তাদের বাজার থেকে ধার করতে হবে।