প্রতীকী ছবি।
পরিসংখ্যানের নিরিখে জিনিসপত্রের দাম সামান্য কমলেও, খুচরো এবং পাইকারি বাজারে প্রায় সব কিছু এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। জুনে মূল্যবৃদ্ধি নামমাত্র কমে খুচরো বাজারে হয়েছে ৭.০১%। আরবিআই নির্ধারিত ৬% সহনসীমার থেকে অনেক বেশি। পাইকারি বাজারে ১৫.১৮%। অর্থাৎ দাম এখনও যেখানে, তাতে বিন্দুমাত্র স্বস্তি নেই।
তবে দাম বাড়ছে বিশ্ব জুড়েই। আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি ৯.১%। তারা যে ফের সুদ বাড়াবে সন্দেহ নেই। অনুমান, ২৬-২৭ জুলাইয়ের বৈঠকে ১০০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত বাড়াতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ। ভারতের কাছে এটি অশনি সঙ্কেত। আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধি এ দেশের মূলধনী বাজার থেকে বিদেশি লগ্নি বেরোনোর হিড়িক বহাল রাখবে। তখন টাকার দামের পতন ঠেকানো আরও শক্ত হবে। গত সপ্তাহে এক সময়ে ডলার প্রায় ৮০ টাকা ছুঁয়েছিল। পরে কিছুটা ওঠে।
সুদ অবশ্য বাড়াতে হবে ভারতেও। আশঙ্কা, মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে অগস্টের বৈঠকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক আরও ২৫-৫০ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) বাড়াতে পারে। এতে বাড়ি, গাড়ি-সহ বিভিন্ন ঋণে সুদের হার আরও বাড়বে, যা শিল্প এবং আর্থিক বৃদ্ধির পরিপন্থী। গত দু’দফায় রেপো বেড়েছে ৯০ বেসিস পয়েন্ট। ব্যাঙ্কগুলি ঋণে সুদ বাড়ালেও, জমায় তেমন বাড়ায়নি। তা স্থির স্বল্প সঞ্চয়েও। অথচ তার অনেকগুলির সুদ যার উপরে নির্ভরশীল, সেই সরকারি বন্ড ইল্ড বেড়ে প্রায় ৭.৪% হয়েছে। এক দিকে পণ্যের চড়া দাম এবং অন্য দিকে চড়া সুদ সমস্যায় রেখেছে আমজনতাকে।
লাগামছাড়া পণ্যমূল্য, পড়তি টাকা,দামি তেলে বিপাকে দেশের অর্থনীতি। ফলে শেয়ার বাজার অস্থির। আকর্ষণ কমছে একুইটি ফান্ডের। গত ক’মাসে কিছু নামমাত্র রিটার্ন দিয়েছে, কিছু লোকসানে। এসআইপি অ্যাকাউন্ট খোলার হার কমেছে জুনে। বেড়েছে বন্ধের সংখ্যা। কমেছে পোর্টফোলিয়োর গড় মূল্য। আগের ১২ মাসে বাজারে মোট শেয়ার দরের নিরিখে বড় মাপের সংস্থা নির্ভর এসআইপি-র রিটার্ন তলিয়েছে শূন্যের ১০% নীচে। তবে বাজারে অস্থিরতা সত্ত্বেও ব্যাঙ্কের কম সুদ ফান্ডে লগ্নি বাড়াবে বলেই ধারণা।
লগ্নিকারীদের নজর এখন সুদ বৃদ্ধি, দেশে বর্ষা, মূল্যবৃদ্ধির গতি ও সংস্থার আর্থিক ফলে। এপ্রিল-জুনের ফল প্রকাশ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের নিট লাভ ১৯% বেড়েছে। মাইন্ডট্রি-র প্রায় ৩৭%।
(মতামত ব্যক্তিগত)