প্রতীকী ছবি।
সুদ কবে আরও কমবে? প্রশ্নটা ঘুরছে সর্বত্র। আশায় বুক বেঁধে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরের ঋণনীতির অপেক্ষায় বসে শিল্প। দিন গুনছে শেয়ার বাজারও। অনেকেরই ধারণা, অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়াতে ঋণে আরও সুদ কমা জরুরি। যাতে আরও কম খরচে পুঁজি পাওয়া যায়। এই দুর্দিনে সেটা শিল্পের পক্ষে স্বস্তির। চাইলে তখন লগ্নিও বাড়াতে পারবে তারা। আমজনতার ধারের খরচ কমলে, তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নিয়ে কেনাকাটার উৎসাহ পেতে পারেন। বিশেষত সরকারের তরফে চাহিদা বৃদ্ধির তেমন দাওয়াই যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে না। তাই শিল্প ও বাজারের নজর মূল্যবৃদ্ধির হারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আগেই বলেছেন, ওই হারই যত নষ্টের গোড়া। না-হলে সুদ কমার পথ এখনও খোলা।
গত সপ্তাহে ফের ৩৮ হাজারে নেমেছে সেনসেক্স। শুক্রবার তা থামে ৩৮,৮৪৬ অঙ্কে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এলে কিন্তু সূচক আরও চড়বে।
তবে শুধু সুদ কমিয়ে যে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যাবে না, এ কথা বলছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকেই। সেই যুক্তিতে গত দেড় বছরে ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমার কথা তুলছেন তাঁরা। যার মধ্যে শুধু করোনাকালেই কমেছে ১১৫ বেসিস পয়েন্ট। তাঁদের দাবি, আসলে কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্যই একমাত্র পথ।
এই তর্ক-বিতর্কের মধ্যে অগস্টে নামমাত্র কমেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। জুলাইয়ের ৬.৭৩% থেকে কমে হয়েছে ৬.৬৯%। বলা হচ্ছে, মূলত খাদ্যপণ্যের কিছুটা দাম কমাই কারণ। কিন্তু বাজারে গেলে মানুষ তা টের পাচ্ছেন না। বরং মূল্যবৃদ্ধি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যের (৪%, +/-২%) অনেক উপরে থাকায় অক্টোবরের ঋণনীতিতেও সুদ কমবে কি না সন্দেহ। শক্তিকান্ত বলেছেন, অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পদক্ষেপ করবেন। তার মধ্যে সুদ ছাঁটাই থাকবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি সুদ নির্ধারণের জন্য পরের দফায় বৈঠকে বসবে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর।
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হবে সংস্থাগুলির জুলাই-সেপ্টেম্বরের আর্থিক ফল প্রকাশ। আশা, প্রথম তিন মাসের তুলনায় তা ভাল হবে অনেকের। সে দিকে তাকিয়েও শক্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছে শেয়ার বাজার।
অন্য যে সব খবরে সূচকের নজর সেগুলি হল—
• জানুয়ারি থেকে জুন বিভিন্ন ফান্ডের শেয়ারে নিট লগ্নি ৩৯৭৫৫ কোটি টাকা। তবে জুলাই, অগস্টে তারা তুলেছে ১৭,৬০০ কোটি।
• ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর সংগ্রহ আগের বছরের তুলনায় ২২.৫% কমে দাঁড়িয়েছে ২,৫৩,৫৩২ কোটিতে।
• রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে ২০,০০০ কোটি টাকা মূলধন জোগানোর কথা বলেছে কেন্দ্র।
• অনুমান, বর্ষা চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। এ বার ভাল চাষ হওয়ার আশা। সে ক্ষেত্রে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। মাথা নামাবে মূল্যবৃদ্ধি।
(মতামত ব্যক্তিগত)