প্রতীকী ছবি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দর মাত্রা ছাড়াচ্ছে। তেলের দাম আকাশছোঁয়া। আশা ছিল, এই অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের সুরাহা দিতে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) ন্যূনতম পেনশন ১০০০ টাকা থেকে বাড়ানো হবে। কিন্তু তা তো হলই না। উল্টে শনিবার পিএফের অছি পরিষদের বৈঠকে কমিটি তৈরি করে এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ঠেলে দেওয়া হল তাদের উপরে। যা দেখে পরিষদের শ্রমিক সদস্য, কর্মী ইউনিয়ন-সহ বিভিন্ন মহলের তোপ, এ ভাবে ন্যূনতম পেনশন বৃদ্ধি পিছোতে চাইছে কেন্দ্র।
সংগঠনগুলির বক্তব্য, ২০১৮ সাল থেকে পিএফের ন্যূনতম পেনশন বৃদ্ধি নিয়ে কথা চলছে। শ্রমিক প্রতিনিধিরা চান তা কমপক্ষে ৩০০০ টাকা করা হোক। কারণ, দেশে বর্তমানে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা ৩০০০ টাকা পেনশন পান। যা এখন সর্বনিম্ন। তা ছাড়া পিএফের সদস্যদের টাকা পেনশন তহবিলে জমাও হয়। কিন্তু তাঁদের ন্যূনতম পেনশন বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।
পরিষদের শ্রমিক প্রতিনিধি সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, তিন বছর ধরে দাবি করা সত্ত্বেও কেন্দ্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে ন্যূনতম পেনশন বাড়তে পারে বলে আশা করা হলেও, তা হয়নি। তিনি জানান, “শনিবার বৈঠকে শ্রমমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি তুলে ধরি। শ্রমমন্ত্রী নতুন কমিটি তৈরির প্রস্তাব দেন। তা তৈরিও হয়। কিন্তু আমার বক্তব্য, ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সরকারি-সহ বিভিন্ন স্তরে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-নিয়ে ফের কমিটির ঘাড়ে ঠেলে দেওয়ার লক্ষ্য আসলে ন্যূনতম পেনশন কার্যকরের বিষয়টি বিলম্বিত করাই।’’
এ দিনের সিদ্ধান্ত অবসরপ্রাপ্ত পিএফ সদস্যদের বঞ্চিত করার কৌশল বলে মনে করেন ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ্যের আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিটির সদস্য অশোক ঘোষও। তিনি বলেন, বর্তমানে ১৬ লক্ষেরও বেশি পিএফ সদস্য ন্যূনতম পেনশন হিসেবে ১০০০ টাকা করে পান। তাঁদের বঞ্চিত করতেই এই পথে হাঁটছে কেন্দ্র।
বৈঠকে পিএফ পেনশন ছাড়াও তিনটি কমিটি তৈরি হয়েছে। সেগুলি হল— পিএফের সদস্য-সহ বিভিন্ন পক্ষের অভিযোগ দ্রুত খতিয়ে দেখা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সমস্যা দূর করা এবং এগ্জ়েম্পটেড-সহ বিভিন্ন সংস্থার নানা প্রশ্নের দ্রুত সমাধান করা। তা ছাড়া পরিকাঠামো লগ্নি তহবিলের মতো প্রকল্পে পিএফের টাকা রাখা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে ফিনান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড অডিট কমিটির হাতে ক্ষমতা দিয়েছে অছি পরিষদ।