অভিযোগ, প্রভিডেন্ট ফান্ডে কর্মীদের পেনশন তহবিলের অর্থও আদানিদের শেয়ারে লগ্নি।
স্টেট ব্যাঙ্ক, এলআইসি-তে সাধারণ মানুষের সঞ্চিত অর্থ কার নির্দেশে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে লগ্নি করা হয়েছিল, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিই বা কার নির্দেশে তাদের ঋণ দিয়েছিল, এ নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলে বিরোধীরা যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এ বার তাদের অভিযোগ, কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংগঠন বা ইপিএফও প্রভিডেন্ট ফান্ডে কর্মীদের পেনশন তহবিলের অর্থও আদানিদের শেয়ারে লগ্নি করেছে।
আজ রাহুল গান্ধী টুইটে অভিযোগ করেন, এলআইসি ও স্টেট ব্যাঙ্কের টাকা আদানিদের দেওয়ার পরে এ বার ইপিএফও-র পুঁজিও আদানিদের। রাহুলের প্রশ্ন, ‘মোদানি’ বা মোদী-আদানি সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পরেও আমজনতার অবসরের জন্য সঞ্চিত অর্থ কেন আদানি গোষ্ঠীর সংস্থায় লগ্নি হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী তদন্ত করাচ্ছেন না। জবাবও দিচ্ছেন না। এত ভয় কেন?
ঘটনাচক্রে সোমবারই ইপিএফও-র অছি পরিষদের বৈঠক ছিল। কংগ্রেসের অভিযোগ নিয়ে সেখানেও আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, পরিষদের চেয়ারম্যান তথা শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব জানান, সবটাই অপপ্রচার। পিএফের টাকা কোথায় লগ্নি হবে, তা সরকার ঠিক করে না। তহবিল স্টেট ব্যাঙ্ক দেখাশোনা করে।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পরে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে ধস নামে। প্রশ্ন ওঠে, তাদের দেওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঋণ, সংস্থাগুলির শেয়ারে স্টেট ব্যাঙ্ক, এলআইসি-র লগ্নির ভবিষ্যৎ কী? আমজনতার সঞ্চয় ঝুঁকির মুখে কি না, সেই আশঙ্কাও দানা বাঁধে। আদানিদের শেয়ারে পিএফের অর্থ লগ্নি হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাও।
হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, বিদেশে ভুয়ো সংস্থা (শেল) খুলে আদানিদের শেয়ারে আদানিদের টাকাই লগ্নি করা হয়েছে। আর এই কারচুপিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে সেগুলির দাম। রাজ্যসভায় সিপিএম সাংসদ জন ব্রিট্টাসের প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, আইনত ভুয়ো সংস্থা বলে কিছু নেই। বিদেশে ভারতীয়দের ভুয়ো সংস্থা নিয়েও তথ্য নেই মন্ত্রকের কাছে। এই বক্তব্যকে বিঁধে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের তির, মোদী সরকারই ২০১৮-র ৮ জুন বলেছিল, ভুয়ো সংস্থার বিপদ নিয়ে টাস্ক ফোর্স তৈরি হচ্ছে। পাঁচ বছর পরে সরকার বলছে, এ নিয়ে তারা কিছু জানে না। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য, কেন্দ্র নিজেই ২০২১-এ প্রায় ২.৩৮ লক্ষ ভুয়ো সংস্থা চিহ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু আদানিদের বিরুদ্ধে সরকার কী ভাবে ব্যবস্থা নেবে? তাই বলেছে, কিছু জানে না। কোনও পদক্ষেপও হবে না। কেন্দ্রের দাবি, গোষ্ঠীর শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সংস্থাগুলিকে নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হিন্ডেনবার্গ। ফলে তদন্তের দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সেবির।
এ দিকে সংবাদ সংস্থার খবর, টিভি চ্যানেল এনডিটিভি অধিগ্রহণের পরে এ বার রাঘব বহেল-এর ব্যবসা সংক্রান্ত খবর পরিবেশনকারী ডিজিটাল সংস্থা কুইন্টিলিয়ন বিজ়নেস মিডিয়ার ৪৯% কিনেছে গৌতম আদানির এএমজি মিডিয়া নেটওয়ার্কস। এ জন্য তারা ঢেলেছে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা।