—প্রতীকী চিত্র।
গত দু’টি অর্থবর্ষে কর্পোরেট সংস্থার থেকে আদায় করা করকে ছাপিয়ে গিয়েছে ব্যক্তিগত আয়কর। সম্প্রতি প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, চলতি অর্থবর্ষেও (২০২৪-২৫) সেই প্রবণতা অব্যাহত। ২০১৯ সালে কর্পোরেট করের হার কমানোর পর থেকেই তা নিয়ে মোদী সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন বিরোধীরা। এ বার সেই আক্রমণকে আরও জোরালো করলেন তাঁরা। বিরোধীদের দাবি, কর্পোরেট কর কমানোয় বিত্তশালীদের ২ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আর মোটা কর দিতে হচ্ছে সাধারণ রোজগেরে মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে।
সম্প্রতি পর্ষদ জানিয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুলাই নিট প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ (কর ফেরতের পরে) হয়েছে ৫,৭৪,৩৫৭ কোটি টাকা। তবে তাৎপর্যপূর্ণ হল, এর মধ্যে ব্যক্তিগত আয়কর যেখানে ৩,৪৬,০৩৬ কোটি, সেখানে কর্পোরেট কর ২,১০,২৭৪ কোটি। অর্থাৎ, ব্যক্তিগত আয়কর সংগ্রহ অনেকটাই পিছনে ফেলেছে কর্পোরেট কর সংগ্রহকে। ২৩ জুলাই লোকসভায় তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার আগে এই পরিসংখ্যানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষ করে যখন শিল্পমহল নিজেরাই সরকারের কাছে দাবি তুলছে ব্যক্তিগত আয়করের ছাড় দেওয়ার। বলছে, সাধারণ মানুষের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ না থাকলে তাদের তৈরি পণ্য বিক্রি হবে কী ভাবে?
রবিবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্স-এ লিখেছেন, মনমোহন সিংহের প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষ দিকে মোট কর সংগ্রহের মধ্যে ব্যক্তিগত আয়করের অনুপাত ছিল ২১%, কর্পোরেট করের ৩৫%। এখন কর্পোরেট করের ভাগ ২৬ শতাংশে নেমেছে। ব্যক্তিগত আয়কর হয়েছে ২৮%। সরকারি তথ্যেই স্পষ্ট, মানুষ শিল্প সংস্থাগুলির তুলনায় বেশি কর গুনছেন। বোঝা বেড়েছে মধ্যবিত্তের। তাঁর আরও বক্তব্য, ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি লগ্নি বাড়াতে কর্পোরেট কর ছাঁটাই হয়েছিল। কিন্তু তা উল্টে কমেছে। মনমোহনের আমলে ওই লগ্নি জিডিপির ৩৫% ছিল। ২০১৪-২৪ সালে ২৯ শতাংশের নীচে নেমেছে। খরচ বেড়েছে সাধারণের।
এ দিন কলকাতায় প্রত্যক্ষ কর পেশাদারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার্সের প্রেসিডেন্ট নারায়ণ জৈনের দাবি, আসন্ন বাজেটে করছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হোক। একই সঙ্গে সরল করা হোক ব্যক্তিগত আয়করের কাঠামো।