নৃপেন্দ্র মিশ্র, সুভাষচন্দ্র গর্গ এবং গিরিশচন্দ্র মুর্মু।
গত পাঁচ বছর ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি। কিন্তু অর্থনৈতিক বিষয়ে নীতি ঠিক করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন। দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটেও সেই নৃপেন্দ্র মিশ্র মুখ্য ভূমিকা নিতে চলেছেন বলে সরকারি মহল মনে করছে।
মঙ্গলবার রাতেই মিশ্রকে ফের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁকে ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমান পদমর্যাদা দেওয়া হবে। এমনিতে বলা হয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী নৃপেন্দ্র শিল্প মহলের সমস্যা ভাল বোঝেন। তাই তাঁর উপরেই অর্থনীতির বিষয়গুলি দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন মোদী। ৭৪ বছরের নৃপেন্দ্র ফের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদে নিযুক্ত হওয়ায়, বাজেটের চাপিকাঠি তাঁর হাতেই থাকবে বলে মনে করছে আমলা মহল।
আগামী ৫ জুলাই নিজের প্রথম বাজেট পেশ করবেন নতুন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই কৃষি ও শিল্প মহলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নির্মলা। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, নতুন সরকারে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের ‘যোগাযোগ রক্ষা’-র কাজ করবেন নরেন্দ্র মোদীর ‘বিশেষ আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত গিরিশচন্দ্র মুর্মু। অরুণ জেটলির জমানায় মন্ত্রকে বসে যে কাজটি করতেন হাসমুখ আঢিয়া। তাঁর মতোই মুর্মু গুজরাত ক্যাডারের আইএএস অফিসার। মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মুর্মু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ছিলেন।
শুধু মোদী নন, মুর্মু অমিত শাহেরও আস্থাভাজন বলে আমলা মহলে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, শাহের বিরুদ্ধে ইশরাত জাহান-সহ গুজরাতের ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা ধামাচাপা দিয়ে তিনি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ভূমিকা নিয়েছিলেন। মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে দিল্লি চলে আসার পরেও মুর্মু মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ছিলেন। সেখানে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ শিল্প সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তাঁকে দিল্লির অর্থ মন্ত্রকে নিয়ে আসা হয়। এখন তিনি ব্যয় সচিব। এ বার সীতারামনের প্রথম বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অর্থ মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয় এবং মোদীর লক্ষ্য অনুযায়ী গরিবদের জন্য প্রকল্পে বরাদ্দ নির্ধারণে মুর্মুকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে বলে ধারণা।
এই দু’জনের পাশাপাশি স্বাভাবিক নিয়মেই বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ। জেটলির বাজেটের সময়ে বিরোধীরা হামেশাই অভিযোগ তুলতেন, বাজেটের সঙ্গের অর্থ বিলের মাধ্যমে নানা আইনে সংশোধন করিয়ে নেওয়া হত। যার সঙ্গে বাজেটের থেকেও অন্য বিষয়ের সম্পর্ক বেশি থাকত। যেমন, অর্থ বিলের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের জন্য ঘুরপথে বিদেশি সংস্থার চাঁদার রাস্তা সহজ করা হয়। আর্থিক বিষয়ক দফতরের সচিব হিসেবে সেই কাজটি গর্গ করতেন। এখন তিনিই আবার অর্থসচিব। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার দায়িত্বও তিনি পালন করেন। তাই বাজেটে কর সংক্রান্ত আইনে বদল হলে তার পিছনে গর্গের মস্তিষ্কই কাজ করবে বলে ধারণা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।