ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দিচ্ছে বলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অগস্টের ঋণনীতিতে সুদ কমায়নি। বৃহস্পতিবার ঋণনীতির কার্যবিবরণীতেও গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এ ক্ষেত্রে আরও অপেক্ষা করার ও ভেবেচিন্তে এগোনোর বার্তা দেন। তার পরেই শুরু হয়েছে চর্চা, তা হলে কি সুদ ছাঁটার মাধ্যমে খরচ কমিয়ে চাহিদা বাড়ানো বা শিল্পের লগ্নির পথ আরও চওড়া করার পথে দাঁড়ি টানল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদদের দাবি, কার্যত এটা দাঁড়ি টানাই। কারণ জোগান যে রকম বিপর্যস্ত, তাতে মূল্যবৃদ্ধি কমার সম্ভাবনা নেই। ফলে সুদ ছাঁটাই শেষ পর্যায় পৌঁছেছে। এ বার দেশের আর্থিক হাল ফেরানোর দায়িত্ব কেন্দ্রের।
যদিও এ দিনই এক সাক্ষাৎকারে শক্তিকান্ত সুদ কমানোর কৌশলে দাঁড়ি টানার জল্পনা উড়িয়ে বলেন, সেই পথ খোলাই। ইঙ্গিত দেন, ব্যাঙ্কগুলির হাতে বেশি টাকা দিতে রিভার্স রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলির থেকে ধার নেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক) কিছুটা বাড়তে পারে।
স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদদের দাবি
• এখনকার জায়গা থেকে মূল্যবৃদ্ধির হারের তেমন মাথা নামানোর সম্ভাবনা না-থাকায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর একেবারে শেষ পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে।
• অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দায়িত্ব এখন সরে গিয়েছে সরকারের হাতে।
• দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করতে হলে সরকারি আয়-ব্যয়ের নীতিকেই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে।
২০১৯ সাল ও এ বছর মিলিয়ে ২৫০ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধি ছুঁয়েছে ৬.৯৩%। তার উপরে করোনা যুঝতে খাদ্যশস্য-সহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে সরকারের। দেশে পণ্য সরবরাহও স্বাভাবিক হয়নি। কবে হবে তা-ও ঠিক নেই। ফলে সব মিলিয়ে এতে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও ৩৫-৪০ বেসিস পয়েন্ট চড়তে পারে। ফলে আরবিআইয়ের পক্ষে আর বড়জোর ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানো সম্ভব।
দুই বার্তা শক্তিকান্তের
• ‘‘যখন আর্থিক বৃদ্ধির হার বেশ খানিকটা সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা, তখন সার্বিক ভাবে খাদ্যপণ্য ও খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির চাপ খুবই চিন্তার বিষয়...বর্তমান অবস্থায় আর্থিক বৃদ্ধি ও মূল্যবৃদ্ধির পরিষ্কার ছবিটা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।’’ —বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত ঋণনীতি কার্যবিবরণীতে
• ‘‘কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সামনে সুদ কমানোর রাস্তা খোলাই আছে।
তবে সেটা করা হবে বুদ্ধি করে এবং ভেবেচিন্তে।...অর্থনীতিকে সাহায্য করতে আরবিআই প্রচলিত বা অপ্রচলিত, দু’ধরনের পদক্ষেপ করতেই প্রস্তুত।’’ —শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে
ওই অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, এ বার অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর দায়িত্ব কেন্দ্রের। আর সেই কাজে গতি আনতে সরকারের আয়-ব্যয়ের নীতিই প্রধান ভূমিকা নেবে।