প্রতীকী ছবি।
দেশে যে দিন ফের পেট্রল-ডিজ়েলের দাম বাড়তে শুরু করল, সে দিনই সংসদ কক্ষে দাঁড়িয়ে আরও জোর গলায় বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং দূষণহীন জ্বালানির পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। বার্তা দিলেন, উন্নত প্রযুক্তির হাত ধরে আর বছর দুয়েকের মধ্যেই বৈদ্যুতিক গাড়ির খরচ কমে পেট্রলচালিতগুলির জায়গায় নেমে আসবে। আর সব থেকে কম খরচের বিকল্প জ্বালানি হিসেবে শীঘ্রই নজর কাড়বে গ্রিন হাইড্রোজেন।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বেড়ে যেখানে পৌঁছেছে (ব্যারেল ১১৬ ডলার), তাতে তার আমদানি খরচ সামলাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সামনে দেশেও তেলের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। অথচ তাতে যে সরকার আমজনতার ক্ষোভের মুখে পড়বে, সেটাও পরিষ্কার। বিশেষত সেগুলির উপরে তাদেরই চাপানো চড়া কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্কের প্রশ্নে। এমন পরিস্থিতিতে বাঁচাতে পারে একমাত্র বৈদ্যুতিক গাড়ি ও গ্রিন হাইড্রোজেনের মতো বিকল্প জ্বালানি। শুধু দূষণ বা আমদানি খরচ সামলাতে নয়, দেশবাসীর ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং বিরোধীদের তোপের হাত থেকেও।
মঙ্গলবার লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে গডকড়ী সস্তার দেশীয় জ্বালানিতে সরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তায় জোর দেন। সাংসদদের কাছে গণ-পরিবহণের জন্য হাইড্রোজেন ব্যবহারের আর্জি জানিয়ে বলেন, তাঁরা যেন নিজের নিজের এলাকায় খালের জল থেকে গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনে উদ্যোগী হন। উল্লেখ্য, তেল শোধনাগার এবং ইস্পাত কারখানায় হাইড্রোজেন লাগে। তা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপাদিত হওয়ায় কার্বন মেশে বাতাসে। কিন্তু সৌর বা বায়ু বিদ্যুৎ থেকে ইলেকট্রোলিসিস পদ্ধতিতে তৈরি গ্রিন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। কেন্দ্র বহু দিন থেকেই দাবি করছে, এই স্বচ্ছ জ্বালানিই ভবিষ্যৎ।
পাশাপাশি বৈদ্যুতিকে জোর দিয়ে মন্ত্রীর দাবি, ‘‘সর্বাধিক দু’বছরের মধ্যে বৈদ্যুতিক স্কুটার, গাড়ি, অটোরিকশার খরচ পেট্রলচালিত ওই গাড়িগুলির সমান হবে। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির দাম কমছে। আমরা জিঙ্ক-আয়ন, অ্যালুমিনিয়াম-আয়ন, সোডিয়াম-আয়ন ব্যাটারিও তৈরি করছি। আপনারা পেট্রলে যদি ১০০ টাকা খরচ করেন, তবে বৈদ্যুতিক গাড়িতে করবেন ১০ টাকা (ব্যবহারের জন্য)।’’