প্রতীকী ছবি।
মৌখিক আশ্বাস মিলল, রাজ্যগুলিকে জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কবে, তার জবাব দিলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
অগস্ট-সেপ্টেম্বরের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেলেনি বলে বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা টানা তোপ দাগছেন। আজ তাঁরা দিল্লিতে নির্মলার সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিংহ বাদল বলেন, দিল্লিতে এসে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে হাত পাতা অস্বস্তিকর। ভাল লাগছে না।
জিএসটি চালুর সময়ে ঠিক হয়েছিল, ২০১৫-১৬ সালে রাজ্যগুলির আয়কে ভিত্তি ধরে প্রতি বছর জিএসটি থেকে ১৪% হারে তাদের রোজগার বাড়তে হবে। না-হলে ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্র। সে জন্য বিলাসবহুল ও পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্যে জিএসটির উপরে বাড়তি সেস বসিয়ে তহবিল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু রাজ্যগুলির অভিযোগ, অগস্ট-সেপ্টেম্বরের সেই জিএসটি ক্ষতিপূরণ এখনও মেলেনি। যা অক্টোবরেই মেটানোর কথা ছিল সরকারের।
অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে বাজারে কেনাকাটা কমেছে। কম বিকোচ্ছে বিলাসবহুল পণ্যও। ফলে সেস বাবদ আয়ে টান পড়েছে। অক্টোবরে তা দাঁড়িয়েছে ৭৬০৭ কোটি টাকা। যেখানে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দিতে লাগে মাসে প্রায় ১৩ হাজার কোটি। গত অগস্ট পর্যন্ত সেস খাতে আয় ও ক্ষতিপূরণের ঘাটতি ছুঁয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, রাজ্যের বকেয়া মেটাতে তাই এত দেরি হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল
• অগস্ট-সেপ্টেম্বরের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানো হয়নি রাজ্যগুলিকে।
• ওই খাতে বিপুল বকেয়া থাকার ফলে রাজ্যগুলির কোষাগারে চাপ পড়ছে।
• কিছু রাজ্য বাধ্য হয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ধার বা ওভারড্রাফট নিচ্ছে।
• নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জোর করে জিএসটি চালুর প্রভাবও এখন স্পষ্ট।
• জিএসটি পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না কেন?
এই টাকা না মেলায় রাজ্যগুলির খরচে টান পড়েছে। আজ পঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশের অর্থমন্ত্রীরা নির্মলার সঙ্গে দেখা করেন। নির্মলা তাঁদের আশ্বাস দেন, অগস্ট-সেপ্টেম্বরের ক্ষতিপূরণ দ্রুত মেটানো হবে। কিন্তু কবে, তা জানাননি। রাজ্যগুলির অভিযোগ, অক্টোবর-নভেম্বরের ক্ষতিপূরণও বাকি পড়েছে।
মনপ্রীত বলেন, ‘‘কাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। স্কুল-হাসপাতাল বন্ধ করতে পারি না। পেনশন-বেতন দিতে হবে। সীতারামন দিনক্ষণ জানাননি।’’ নির্মলা অবশ্য বলেছেন, ক্ষতিপূরণ মেটাতে তারা দায়বদ্ধ।
নির্মলা এ কথা বললেও অর্থ মন্ত্রক সূত্র বলছে, তাদের হাত-পা বাঁধা। কারণ সেস বাবদ আয় যথেষ্ট না-হলে ক্ষতিপূরণ মেটানো হবে কী করে! এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে ওই আয়ের অঙ্ক ৪৬,০০০ কোটি। অথচ রাজ্যগুলিকে প্রায় ৬৬,০০০ কোটি ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হয়েছে। তাদের জিএসটি পরিষদ চিঠি দিয়ে তা জানিয়েওছে। সূত্রের খবর, কী ভাবে সেস বাড়ানো যায়, তা নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর পরিষদের বৈঠকে আলোচনা করতে হবে।