NPS

NPS: এনপিএস করা যাবে ৬৫ বছরের পরেও

ইতিমধ্যেই যাঁরা এনপিএস অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছেন, তাঁদের ফের যোগ দেওয়ার সুযোগ খুলে দেওয়া হয়েছে নতুন নিয়মে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২১ ০৬:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (এনপিএস) সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি আগ্রহী করে তুলতে বেশ কিছু নিয়ম শিথিল করল সরকার। যার মধ্যে অন্যতম পেনশন প্রকল্পটিতে নাম লেখানোর সুযোগ ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের জন্যও খুলে দেওয়া। পেনশন নিয়ন্ত্রক পিএফআরডিএ জানিয়েছে, পরিবর্তিত বিধি অনুযায়ী এখন এনপিএসে যোগ দেওয়া যাবে ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত। আর লগ্নি চালিয়ে যাওয়া যাবে ৭৫ বছর পর্যন্ত। এত দিন প্রকল্পে যোগ দেওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ছিল ৬৫ বছর এবং লগ্নির ৭০ বছর। শুধু তা-ই নয়, ৬৫-র পরে যোগ দিলেও প্রবীণ নাগরিক চাইলে তাঁর পেনশন তহবিলে আগের থেকে বেশি টাকা শেয়ারে খাটাতে পারবেন। কারণ, তাঁদের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে শেয়ারে লগ্নির সর্বোচ্চ সীমাও বেড়েছে। একই সঙ্গে ইতিমধ্যেই যাঁরা এনপিএস অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছেন, তাঁদের ফের যোগ দেওয়ার সুযোগ খুলে দেওয়া হয়েছে নতুন নিয়মে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে কম সুদের জমানায় এনপিএসে আরও বেশি প্রবীণ নাগরিকদের শামিল হওয়ার সুযোগ খুলে দেওয়া, সর্বোপরি শেয়ারে লগ্নির পথ করে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও অতীতে যেখানে সুদের ভরসায় না-থেকে শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডে আরও বেশি লগ্নির পরামর্শ দিয়েছিলেন। শেয়ারে তহবিল খাটানোর বিষয়টিতে অবশ্য জোরাজুরি নেই। লাফিয়ে বাড়তে থাকা বাজারের প্রেক্ষিতে ইঙ্গিত স্পষ্ট, চাইলে বাড়তি আয় করা যেতে পারে শেয়ারে পেনশন তহবিলের বেশি টাকা খাটিয়ে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের সতর্কবার্তা, পেনশন তহবিল বয়স্ক মানুষের শেষ জীবনের পুঁজি। আর শেয়ার বাজারে বেশি রিটার্নের সম্ভাবনা থাকলেও, বিস্তর ঝুঁকি। ৭০-৭৫ বয়সে সেই ঝুঁকি নেওয়া কতটা সম্ভব বা উচিত, প্রশ্ন থাকছেই।

যদিও এনপিএস ট্রাস্টের পরিচালন পর্ষদের চেয়ারম্যান অতনু সেন এ দিন জানিয়েছেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, এখন ৬৫ বছরের পরেও অনেকে কাজ করেন এবং নিয়মিত হাতে টাকা আসে। সেই ব্যক্তিদের অনেকেই অনুরোধ করেছিলেন তাঁদেরও যেন এনপিএসে লগ্নির সুযোগ দেওয়া হয়। সে কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত।’’

Advertisement

এ দিকে, এর মধ্যেই দাবি উঠছে প্রবীণদের সুরাহা দিতে পেনশনকে করমুক্ত করার। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে পেনশনপ্রাপকদের সংগঠন ভারতীয় পেনশনার্স মঞ্চের প্রশ্ন, সাংসদ বা বিধায়কদের পেনশনে যখন কর বসে না, তখন আমজনতার কষ্ট করে রোজগার করা টাকা সঞ্চয় করে গড়ে তোলা তহবিল থেকে পেনশন হাতে আসায় কেন কর বসবে। তাদের দাবি, অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লেখা হলেও সুরাহা মেলেনি। তাই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে তারা।

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ছাড়াও ভারতীয় নাগরিক এবং বিদেশে বসবাসকারী ওভারসিজ় সিটিজেন অব ইন্ডিয়া তকমা থাকা ব্যক্তিরা এনপিএসে যোগ দিতে পারেন। ৬০ বছর বয়সে পৌঁছনোর পরে তহবিলের একাংশ দিয়ে অ্যানুইটি কিনতে হয় এবং সেখান থেকেই মাসে পেনশন মেলে। প্রকল্পে যোগ দেওয়ার সময়ে বাছতে হয় অটো চয়েস বা অ্যাক্টিভ চয়েস। প্রথমটিতে সরকারি ঋণপত্র, শেয়ার এবং কর্পোরেট বন্ডের কোথায় কত পরিমাণ টাকা খাটবে, তা আগে থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে। দ্বিতীয়টিতে তহবিল খাটানোর কিছুটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন লগ্নিকারী। পাশাপাশি, ওই তিনটি লগ্নি ছাড়াও অল্টারনেট অ্যাসেট ক্লাসে (প্রথাগত লগ্নির বাইরে রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট) ৫% পর্যন্ত তহবিল খাটানোর সুযোগ থাকে। পিএফআরডিএ জানিয়েছে, ৬৫ বছরের পরে প্রকল্পে নাম লেখালে অ্যাক্টিভ চয়েসে ৫০% পর্যন্ত শেয়ারে খাটানো যাবে। অটো চয়েসের ক্ষেত্রে সেই সীমা ১৫%।

অতনুবাবুর দাবি, আগ্রহী প্রবীণদের অনেকে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে শেয়ারে টাকা খাটাতে চান বলে জানিয়েছেন। সেই কারণেই তাঁদের সুবিধা করে দিতে অ্যাক্টিভ চয়েসে ৫০% পর্যন্ত শেয়ারে লগ্নির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement