—ফাইল চিত্র।
অর্থনীতির নাড়ি টিপে ছন্দে ফেরার লক্ষণ দেখছেন বলে বার বার দাবি করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু রবিবার কার্যত সেই দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের হুঁশিয়ারি, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত অনিশ্চিত’ এবং চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি প্রায় ১০% সঙ্কুচিত হতে পারে। তবে শুধু এটুকু বলেই থেমে থাকেননি বর্তমানে পরিসংখ্যান বিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান প্রণব। সঙ্কটের গভীরতা বোঝাতে চাঁছাছোলা ভাষায় তাঁর বার্তা, এই সরকার যদিও খুব একটা দক্ষতার সঙ্গে সার্বিক ভাবে অর্থনীতি সামলে উঠতে পারেনি, তবে বর্তমান মন্দার পরিস্থিতি সত্যিই তাদের হাতের বাইরে।
কেন্দ্র যদিও শিল্প, পরিকাঠামো ইত্যাদির পরিসংখ্যান তুলে ধরে ক্রমাগত বার্তা দিচ্ছে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। খোদ মোদী বলেছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিসংখ্যান যথেষ্ট উৎসাহজনক। ছোট শিল্পকে কত ঋণ দেওয়া হয়েছে, তা তুলে ধরে চাহিদা বাড়ার বড়াই স্পষ্ট অর্থ মন্ত্রকের হিসেবে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থাও চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি সঙ্কোচনের পূর্বাভাস কমিয়ে চলেছে। কিন্তু রবিবার সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রণব সাবধান করছেন এই বাড়তি প্রত্যাশা সম্পর্কেই। উল্টে তাঁর পরামর্শ, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি চূড়ান্ত অনিশ্চিত। অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
লকডাউনের জেরে এপ্রিল-জুনে জিডিপি কমেছিল ২৩.৯%। কিন্তু অর্থবর্ষের দ্বিতীয় (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ত্রৈমাসিকে সঙ্কোচন ৭.৫%। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বলছে, প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে অর্থনীতি। কিন্তু প্রণববাবুর কথায়, জিডিপির হিসেবে মূলত বড় সংস্থাগুলির অবস্থাই ধরা পড়ে। ফলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে অর্থনীতি প্রত্যাশার থেকে বেশি উন্নতি করছে। অথচ গত ক’মাসে ছোট সংস্থাগুলির বেশি ক্ষতি হয়েছে।
যতদিন না উৎপাদন বাড়ানোর জন্য লগ্নি আসছে, তত দিন বৃদ্ধির চাকা গড়াবে না বলেও সতর্ক করেছেন প্রণববাবু। তিনি বলেন, এখন যা অবস্থা তাতে উৎপাদন শিল্প গত বছরের চেয়ে খুব একটা ভাল করবে বলা যাচ্ছে না। উল্টে উৎপাদন ক্ষমতা সঙ্কোচনের হাত ধরে তা কমে যেতে পারে।