স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার বদলাল না কেন্দ্র

এমন বেহাল পরিস্থিতির মধ্যে গরিব, মধ্যবিত্ত, প্রবীণদের স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমানোর ঝুঁকি নিল না নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

অর্থনীতির ঝিমুনির ধাক্কায় রোজগার কমে যাওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। তার মধ্যে ঘৃতাহুতি দিয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি-র মতো বিষয়। যার জেরে বিক্ষোভে উত্তাল বহু রাজ্য। এ দিকে পেঁয়াজ-আলু থেকে পেট্রল-ডিজেল— আকাশছোঁয়া দাম ধাক্কা দিয়েছে আমজনতার পকেটে।

Advertisement

এমন বেহাল পরিস্থিতির মধ্যে গরিব, মধ্যবিত্ত, প্রবীণদের স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমানোর ঝুঁকি নিল না নরেন্দ্র মোদী সরকার। ব্যাঙ্কে আমানতের তুলনায় পিপিএফ এবং প্রবীণদের ডাকঘরের সঞ্চয়ে সুদের হার আপাতত অপরিবর্তিতই থাকছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলা সত্ত্বেও জানুয়ারি থেকে মার্চের জন্য সুদের হার কমানো হচ্ছে না।

আজ অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, পিপিএফ (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড), পাঁচ বছরের ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটে আগের মতোই ৭.৯ শতাংশ হারে সুদ মিলবে। বয়স্ক নাগরিকদের জন্য পাঁচ বছরের সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ মিলবে ৮.৬ শতাংশ হারে। ডাকঘরে পাঁচ বছরের সঞ্চয়ে ৭.৭ শতাংশ হারেই সুদ মিলবে। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘মানবিক মুখ দেখানোর জন্য সরকার এ ক্ষেত্রে অর্থনীতির থেকে রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পরিকাঠামো ধাক্কা খেলেও কমল চলতি খাতে ঘাটতি

স্বাভাবিক ভাবেই মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে গরিব, মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে পেনশনভোগী ও প্রবীণেরা স্বস্তি পাবেন। কারণ ২০১৯-এ ব্যাঙ্কগুলি বার বার ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার কমিয়েছে। ডাকঘরে সঞ্চয়েও সুদ কমেছে। এর ফলে সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছেন পেনশনভোগীরা। তাঁরা অবসরের পরে প্রাপ্য টাকার

উপরে পাওয়া সুদের ভরসায় থাকেন। স্টেট ব্যাঙ্কের অনুমান, সুদ কমার ফলে পেনশনভোগীদের আয় বছরে গড়ে ৫,৮৪৫ টাকা কমেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক যেমন গত অগস্টেই বয়স্কদের ফিক্সড ডিপোজিটে ৭.৩ শতাংশ সুদ দিত। এখন দিচ্ছে ৬.৭৫ শতাংশ।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চাইছিল, কেন্দ্রীয় সরকার ডাকঘর ও অন্যান্য স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমাক। কারণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০১৯-এ বারবার সুদের হার কমিয়েছে। ২০১৯-এ ১.৩৫ শতাংশ অঙ্ক সুদের হার কমেছে। উদ্দেশ্য ছিল, শিল্পের জন্য ব্যাঙ্কগুলি অপেক্ষাকৃত অল্প সুদে ঋণ দিতে পারবে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যতখানি সুদের হার কমিয়েছে, ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ততখানি সুদের হার কমাতে পারেনি। কারণ ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে তখনই কম সুদে ধার দেওয়া সম্ভব, যখন তারা আমানতেও সুদের হার কমাবে। কিন্তু আমানতে সুদের হার কমাতে
পারছিল না ব্যাঙ্কগুলি। কারণ ডাকঘরের আমানতে সরকার তুলনামূলক বেশি হারে সুদ দিচ্ছে। দুইয়ের ফারাক বেশি হয়ে গেলে সবাই ডাকঘরেই টাকা রাখতে চাইবেন। সেই কারণেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সরকারকে ডাকঘরে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমাতে বলেছিল। কিন্তু সরকার সে পথে না হাঁটায় ব্যাঙ্ক কী ভাবে সুদ কমাবে, সে প্রশ্ন উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement