ফাইল ছবি
দেড় দশকেরও বেশি আগে চর্চা শুরু হয়েছিল কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল-এর রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানের পরিকল্পনা নিয়ে। যা গাড়ির জ্বালানি (সিএনজি) হিসেবেও ব্যবহার হওয়ার কথা। নানা জট পেরিয়ে সেই পাইপলাইন প্রকল্প এগোচ্ছে। নির্মাণ শেষ হলে তাতে করে রাজ্যে আসবে প্রাকৃতিক গ্যাস। যার মধ্যে অন্যতম কোল বেড মিথেন (সিবিএম) এখন আসছে ট্রাকে। গেল-এর সিবিএম কিনে তিনটি বণ্টন সংস্থা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে ৩৩টি সিএনজি পাম্প চালু করেছে। চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) চারটি (যোগ দেবে আরও একটি) বণ্টন সংস্থার আরও অন্তত ৪০টি চালুর লক্ষ্য। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সিএনজি গাড়ির বিক্রি এবং পুরনো গাড়িতে সিএনজি কিট বসাতে রাজ্যের পদক্ষেপের সুফল পুরো মিলছে না। রাজ্য অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।
দেশে গ্যাস বণ্টনের জন্য অঞ্চল ভাগ করে বিভিন্ন সংস্থাকে বরাত দেয় নিয়ন্ত্রক পিএনজিআরবি। বেঙ্গল গ্যাস (বিজিসি), ইন্ডিয়ান অয়েল আদানি গ্যাস (আইওএজি), হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসি), ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি) এবং ভারত পেট্রোলিয়াম (বিপিসি) এ রাজ্যে বরাত পেয়েছে। কিন্তু সিএনজি বিক্রি নির্ভর করবে গাড়ির চাহিদার উপরে। তাই বণ্টন সংস্থাগুলির পাশাপাশি গাড়ি সংস্থা, ডিলার এবং পুরনো গাড়িতে সিএনজি-কিট জোড়ার সংস্থাকে নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনায় বসেছিল এইচপিসি। সেখানেই নতুন পাম্প চালুর কথা জানান বণ্টন সংস্থার কর্তারা। বিজিসি-র সিএনজি পাম্প ৭টি। খুলবে আরও ৮-১০টি। এইচপিসির ১০ থেকে হবে ২৫টি। চালু ১৬টির পরে আরও ৭টি খুলবে আইওএজি। বিপিসি-র লক্ষ্য চার জেলায় ১০টি পাম্প।
গাড়ি সংস্থা ও ডিলারদের বক্তব্য, সিএনজি গাড়ি নিয়ে আগ্রহ থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের দামের ফারাকে সমস্যা হচ্ছে। আবার রাজ্য সিএনজি গাড়িতে কিছু ছাড় দিলেও, সেটি নথিভুক্তির নিয়মকানুন নিয়ে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরগুলি ধোঁয়াশায়। বাণিজ্যিক গাড়ির ‘অফার লেটার’-এ সিএনজি-র বিষয়টি লেখা যাচ্ছে না। পুরনো গাড়িতে কিট বসানোর সংস্থা বলছে, তারা লাইসেন্স পেলেও গাড়ির নথিতে উল্লেখ করা যাচ্ছে না। তবে সকলেই জানিয়েছে, পরিবহণ দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে।
বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম ঘোষের বক্তব্য, ১৫ বছরের বেশি বয়সের সিংহভাগ ডিজ়েল-ট্যাক্সিই ২০২৩-২৫ সালের মধ্যে বাতিল হবে। সেই সীমা না বাড়ালে বাড়তি গুনে গাড়িগুলি সিএনজি-তে বদলে লাভ! তার সিলিন্ডার বসালে পিছনে মালপত্র রাখার জায়গাও কার্যত থাকবে না। অথচ কলকাতায় গাড়ির ছাদে মাল নেওয়ার অনুমতি নেই। এই সমস্যারই বা সমাধান কী, প্রশ্ন তাঁর।