শক্তিকান্ত দাস, আরবিআই গভর্নর। ফাইল চিত্র।
করোনার মধ্যে এক দিকে ব্যাঙ্ক-এটিএমে যাওয়ার অনীহা। অন্য দিকে এই সময়ে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির হাত ধরে জালিয়াতি বেড়ে যাওয়া। এই প্রেক্ষিতে গ্রাহক নিরাপত্তায় জোর দিতে উদ্যোগী হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার ঋণনীতি ঘোষণা করে গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানালেন, এ বার থেকে কার্ড ছাড়া এটিএম থেকে টাকা তোলার সুবিধা সব ব্যাঙ্কের জন্যই খুলে দেওয়া হবে। এ জন্য ব্যবহার করা হবে ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস (ইউপিআই) ব্যবস্থা। এতে কমবে কার্ডে প্রতারণা। উল্লেখ্য, বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মতো কিছু বড় ব্যাঙ্ক তাদের নিজেদের গ্রাহকদের নিজেদের এটিএমে এই সুবিধা দেয়।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী কংগ্রেস। শীর্ষ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটেছে। বলেছে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কার কথা। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালার টুইট, ‘‘কার্ড ছাড়া ইউপিআই-এর মাধ্যমে টাকা তোলার সিদ্ধান্ত প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভাল। কিন্তু কম বৃদ্ধি ও চড়া মূল্যবৃদ্ধির যুগে সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে টাকা থাকবে, তা আরবিআই আশা করে কী করে?’’ অর্থমন্ত্রী ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এর কোনও উত্তর দেয়নি বলেও ক্ষোভ তাঁর।
প্রসঙ্গত, এখন সাধারণত এটিএম থেকে টাকা তুলতে লাগে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড। এতে কার্ড স্কিমিং, কার্ড ক্লোনিং-এর মাধ্যমে প্রতারণার সম্ভাবনা থাকে। যেখানে একটি কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়। শক্তিকান্ত জানান, নতুন ব্যবস্থায় টাকা তোলার সময়ে কার্ড ব্যবহার করা হবে না বলে এই ধরনের জালিয়াতির সুযোগ কমবে। এ নিয়ে ইউপিআই ব্যবস্থার পরিচালন কর্তৃপক্ষ এনপিসিআই, সব ব্যাঙ্ক এবং এটিএম সংস্থাগুলির কাছে নিয়মবলী পাঠানো হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলেরও মতে, এখন নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিতে এই ব্যবস্থায় অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে নথিভুক্ত হতে হয়। সেখান থেকে আর্জি জানালে পিন আসে, যা এটিএমে দিয়ে টাকা তোলা যায়। ইউপিআই ব্যবস্থায় মোবাইলে আসা পিন এটিএমে ব্যবহার হবে। ফলে সেখানে সুরক্ষা তুলনায় বেশি। ইউবিআই-এর প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেনও জানান, ‘‘নিরাপত্তার নিরিখে এটি ভাল পদক্ষেপ। এক বার ভাল করে বুঝে নিতে পারলে প্রক্রিয়া আসলে খুবই সহজ। এর ফলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।’’
এ ছাড়াও, শুক্রবার ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ দিতে ভারত বিল পেমেন্ট সিস্টেমে ব্যাঙ্ক নয় এমন সংস্থাগুলির অন্তর্ভুক্তির জন্য তাদের মূলধনের অঙ্ক কমিয়েছে ২৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। ছিল ১০০ কোটি।