প্রতীকী ছবি।
আমপানের অভিঘাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এবং তার-অপটিক্যাল ফাইবার কাটা পড়ায় কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের সাত জেলায় বিপর্যস্ত হয়েছিল টেলিকম পরিষেবা। পাঁচ দিন পেরিয়েও সেই বিপর্যয় বহাল বহু জায়গায়। জল-বিদ্যুৎহীন মানুষদের ক্ষোভের সঙ্গেই তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফোন করতে গিয়ে নাজেহাল হওয়ার অসন্তোষ। পরিস্থিতির খোঁজ নিতে সোমবার রাজ্যে বিএসএনএলের দুই সার্কলের সিজিএমের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে টেলি-পরিকাঠামো দ্রুত মেরামতির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ধাপে ধাপে কিছু এলাকায় যেমন বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরছে, টেলিকম পরিষেবাও তেমনই চালু হয়েছে কিছু অঞ্চলে। তবে এ দিন ফের কোথাও কোথাও সেই পরিষেবার মান খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ। ধাক্কা খেয়েছে তারযুক্ত ব্রডব্যান্ডও। ফলে বাড়ি থেকে কাজের প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। আইআইএম-কলকাতা কর্তৃপক্ষ জানান, এমবিএ পাঠক্রমের ভর্তির প্রক্রিয়া ও অনলাইন পঠনপাঠনও ব্যাহত হয়েছে।
ক্যালকাটা টেলিফোন্সের সিজিএম বিশ্বজিৎ পালের দাবি, দু’টি এক্সচেঞ্জের মধ্যে অপটিক্যাল ফাইবার মারফত পরিষেবা যায়। তাঁদের প্রায় অর্ধেক এলাকায় সেই ফাইবার মাটির উপর দিয়ে যাওয়ায় তার একাংশ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ না-থাকলে কোথায় ফাইবার কাটা পড়েছে বোঝা যায় না। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৫০০টি লিঙ্ক-ফাইবার পর্যদুস্ত। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসার পরে সেগুলি জোড়া হলেও, কিছু ক্ষেত্রে গাছ কাটতে গিয়ে নতুন করে কাটা পড়ছে ফাইবার। ফলে ফের টেলি-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, ক্যাল-টেল এলাকায় এখনও প্রায় ৩০% এক্সচেঞ্জ ও টাওয়ার বিদ্যুতের অভাবে অকেজো। ক্যামাক স্ট্রিটের এক্সচেঞ্জ জলের তলায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলেরও ১৫% এক্সচেঞ্জ ও টাওয়ার বিকল, জানাচ্ছেন বিএসএনএলের রাজ্য সার্কলের সিজিএম আর শর্মা।
ঝড়ে টাওয়ার অকেজো হওয়ায় ও বিদ্যুতের অভাবে সব সংস্থার পরিষেবাই ব্যাহত হয়েছে। তাই একে অন্যের টাওয়ার-সহ অনুষঙ্গিক পরিকাঠামো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে টেলিকম দফতর। বিশ্বজিৎবাবু জানান, সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ ক্যাল-টেল অঞ্চলে বিএসএনএলের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছেন রিলায়্যান্স-জিয়োর ২ লক্ষ, ভোডাফোন-আইডিয়ার ৪০ হাজার এবং এয়ারটেলের ২৫ হাজার গ্রাহক। আর ভোডাফোন ও এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছেন ক্যাল-টেলের ১০ হাজার জন। আর শর্মা জানান, ওয়েস্টবেঙ্গল সার্কলে দিনের যে কোনও সময়ে ওই তিন সংস্থার প্রায় ২ লক্ষ গ্রাহক বিএসএনএলের নেটওয়ার্কে পরিষেবা পাচ্ছেন। তাঁদের ৬-৭ হাজার গ্রাহক অন্য সংস্থাগুলির পরিকাঠামো ব্যবহার করছেন।