চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রোগীদের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে বিভ্রান্তি। আর সেটাই তৈরি করে দিচ্ছে নতুন ব্যবসার সুযোগ। ভারতের ১২,৬০০ কোটি ডলারের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে জায়গা করে নিতে ঝাঁপাচ্ছে ‘হেলথ’ বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মোবাইল অ্যাপলিকেশন (অ্যাপ) প্রস্তুতকারকরা।
অ্যাপোলো কাণ্ডের মতো ঘটনা বার বারই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব। সমস্যার মূলে রয়েছে চিকিৎসার খরচ ও মান নিয়ে বিভ্রান্তি। যার জেরে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্কে বিশ্বাসের ভিত নড়ে যাচ্ছে।
এই ঘাটতিকে পুঁজি করে কলকাতা শহরেই তৈরি হয়েছে নতুন অ্যাপ, ‘হেলথবাড্স’। কোন হাসপাতালে কোন অপারেশনের খরচ কত? হাসপাতালের প্যাকেজ বলতে কি বোঝায় ? কোথায় কী কী স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়? সেগুলির খরচ কত? সংস্থার অন্যতম কর্তা সোমনাথ দাশগুপ্তের দাবি, এ সব প্রশ্নের উত্তর দেবে এই অ্যাপ। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যার মূলে রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব। রোগী ও হাসপাতালের মধ্যে সেতু তৈরি করবে এই অ্যাপ।’’
বাজারের টানেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অ্যাপ তৈরি করতে ঝাঁপাচ্ছে স্টার্ট-আপ দুনিয়া। তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও সংশ্লিষ্ট শিল্পের বাজার ২০১৭ সালে দাঁড়াবে ১৬,০০০ কোটি ডলার ও ২০২০-তে ২৮,০০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে টেলিমেডিসিনের বাজার ২০২০ সালে ৩.২ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে এই বাজার দেড় কোটি ডলার, যে-বাজার ধরার জন্য কম খরচ ও স্বচ্ছতাই বাজি অ্যাপ প্রস্তুতকারকদের।
শুধু বিপুল চাহিদাই নয়। ১০০ কোটির বেশি মোবাইল যোগাযোগের দৌলতে প্রযুক্তির ব্যবহারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে স্টার্ট-আপ শিল্পের দাবি। প্রযুক্তির হাত ধরে এই বাজার ধরতে ঝাঁপিয়েছে বাড়ি এসে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার সংস্থা পোর্টিয়া মেডিক্যাল, ভিডিও মেডিসিন অ্যাপ ডক্টর ইনস্টা, চিকিৎসার সরঞ্জাম তৈরির জন্য ইনঅ্যাকসেল, টিকা দেওয়ার সংস্থা ইন্ডিভ্যাক, রোগীর রেকর্ড সংরক্ষণের সংস্থা লাইভ-হেলথ-সহ আরও অনেক স্টার্ট-আপ।
লাভের হিসেব কষছে বিনিয়োগকারীরাও। আর সেই অঙ্কে স্বাস্থ্য পরিষেবা অ্যাপের সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে বলে দাবি স্টার্ট-আপ মহলের। হেলথবাডস-এর ২০% অংশীদারি নিয়েছেন এক লগ্নিকারী। ডক্টর ইনস্টা সম্প্রতি পেয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ ডলার। পোর্টিয়া পেয়েছে প্রায় ৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ। লাইব্রেটে এসেছে ১ কোটির বেশি ডলার।