মলয় ঘটক। —ফাইল চিত্র।
খনি শিল্পে লগ্নির নিরিখে ভারত বহু দেশের পিছনে পড়ে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা ডেলয়েট। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু নীতিকে দায়ীও করেছে তারা। আর সেই সূত্রেই রাজ্যের শ্রম এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে খনন-সহ উৎপাদন শিল্পের অগ্রগতির হার জাতীয় গড় বৃদ্ধিকে ছাপিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি কলকাতায় খনি শিল্পের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মলয়বাবু বলেন, ‘‘২০২৩-এর এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যে উৎপাদন শিল্প বেড়েছে ৭.২% হারে। অথচ জাতীয় স্তরে তার গড় বৃদ্ধি ছিল ৫.৮%।’’
বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত ওই সম্মেলন উপলক্ষে খনি শিল্প নিয়ে চার দিনের একটি প্রদর্শনীও হচ্ছে। কেন্দ্রীয় খনি এবং ইস্পাত মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথ ভাবে সায়েন্স সিটিতে তা শেষ কাল, শনিবার। সম্মেলনে মলয় জানান, সম্প্রতি রাজ্য পশ্চিম বর্ধমানের গৌরাঙ্গডিহি এবিসি কয়লা খনির উৎপাদন পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। সেখানে ৬.২ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে। এটি চালু হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তবে ডেলয়েটের পার্টনার রাজীব মৈত্র আন্তর্জাতিক কিছু সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘খনন শিল্পে লগ্নি টানায় দেশের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ কেন্দ্রের কর সংক্রান্ত নীতি। এ ছাড়া পরিবেশ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দেরিতে অনুমোদন দেওয়া, পরিকাঠামোর অভাব ইত্যাদিও দায়ী।’’ তাঁর দাবি, ব্রাজ়িল, কানাড-সহ বিভিন্ন দেশে করের হার ভারতের থেকে অনেক কম। আর্থিক বৃদ্ধিতে খনি শিল্পের গুরুত্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাস্তবায়িত করতে লগ্নিতে উৎসাহ দেওয়ার নীতি জরুরি।
সিআইআইয়ের খনি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির চেয়াররম্যান অরুণ মিশ্রও লগ্নিবান্ধব খনি শিল্প গড়ে তোলায় জোর দেন। গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ উত্তোলনের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কথাও বলেন। বণিকসভার পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান এসকে বেহারা বলেন, ২০৩০-এর মধ্যে বিশ্বে খনি এবং নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হবে ভারত। দেশে ২০১৮-১৯ সালে যা খনিজ উত্তোলন হয়েছে তার মূল্য ছিল ৯৭০ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে ১৪২৩ কোটি ডলার হয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইনস সেফ্টি উজ্জ্বল তাহ বলেন, আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে খনি শিল্পে দুর্ঘটনা শূন্যে নামানোর লক্ষ্য। এ জন্য গবেষণা-উন্নয়নে পুঁজি চাই। তাতে গভীর সমুদ্রে খননের জন্য গবেষণাতেও জোর দেওয়া যাবে।