ফাইল ছবি
চূড়ান্ত ঝুঁকির কাজ। লাগে বিশেষ দক্ষতা। অথচ গত প্রায় সাড়ে ছ’দশক ধরে রাজ্যের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ঠিকা কর্মীদের জন্য নেই ন্যূনতম বেতন কাঠামো। দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত সেই দরজা খুলতে চলেছে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে। দুর্গাপুজোর আগেই বিদ্যুৎ শিল্পের ঠিকা কর্মীদের ন্যূনতম বেতন হার ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার। উপকৃত হতে পারেন প্রায় ৫০,০০০ কর্মী।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ঠিকা কর্মীদের শ্রেণি নির্ধারণ এবং বেতন হার সংশোধনের দাবিতে গত বছর কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি। আদালত নির্দেশ দেয়, তিন মাসের মধ্যে ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে ওই কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত বিবাদের মীমাংসা করতে হবে। ইউনিয়নের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ তা না করায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে তারা। তার পরেই সমাধানের রাস্তায় এগোচ্ছে বিষয়টি।
বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ঠিক কর্মীদের বেতনের সমস্যার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন রাজ্যের শ্রমসচিব বরুণ রায়। তিনি জানান, এখন নির্মাণ শিল্পের ঠিকা কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য বেতন অনুযায়ী পারিশ্রমিক দেওয়া হয় বিদ্যুতের ঠিকা কর্মীদেরও। বরুণবাবু বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ শিল্পের ঠিকা কর্মীদের জন্য ন্যূনতম বেতন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। পুজোর আগেই তা ঘোষণা করা হতে পারে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই কর্মীরা যে কাজ করেন, তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তারে বিদ্যুৎ প্রবাহ সক্রিয় থাকাকালীন কাজ করতে হয় তাঁদের। এর জন্য বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন।’’ শ্রমসচিব জানান, ন্যূনতম বেতন চালু হলে তা শুধু রাজ্য সরকারের তিনটি বিদ্যুৎ সংস্থার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে না। লাভবান হবেন বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীরাও।’’
এআইইউটিইউসি অনুমোদিত রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ঠিকা কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মানস কুমার সিংহ বলেন, ‘‘১৯৫৬ সালে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ গঠন হওয়ার পর থেকে গত প্রায় ৬৬ বছর এই ক্ষেত্রের ঠিকা কর্মীদের জন্য কোনও ন্যূনতম বেতনের ব্যবস্থা নেই। নির্মাণ শিল্পের বেতন দিয়ে তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাঁদের জন্য ন্যূনতম বেতন চালুর দাবি জানিয়ে বহু বার রাজ্যের কাছে দরবার করেছি। কিন্তু ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছি আমরা। রাজ্য আদালতের নির্দেশ না-মানায় আমাদের আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে।’’