বাজার ভালো রাজনৈতিক পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের। নিজস্ব চিত্র।
আগামী ১৯ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচনের সাত দফার ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হতে চলেছে। প্রথম দফার ভোট প্রক্রিয়ার দু’সপ্তাহও বাকি নেই। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ১০০ কোটি নির্বাচকমণ্ডলীর দেশে ইতিমধ্যেই উত্তাপ পেতে শুরু করেছে রাজনৈতিক পণ্যের একটি বিশেষ ক্ষেত্র। ঠিক যেমন পেয়ে এসেছে অতীতের সমস্ত নির্বাচনে।
রাজনৈতিক পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে যেমন একটি ক্ষণস্থায়ী আর্থিক কর্মকাণ্ড বছরের বিভিন্ন সময়ে মাথা তোলে, ঠিক তেমনটাই ঘটে নির্বাচনে। বরং আরও ব্যাপক আকারে। যা এখন অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মন্দির শহর মথুরার বস্ত্র ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়াল জানাচ্ছেন, রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন, ব্যাজ-সহ বিভিন্ন পণ্যের বরাত বেড়ে চলেছে। সেই কারণে প্রত্যেক নির্বাচনের আগে কাপড়ের কারখানায় উৎপাদনের ধরনটাকেই বদলে ফেলেন তাঁরা। অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয় দলগুলির চাহিদা মেটানোর জন্য। শুধু মথুরাতেই অন্তত ৪০টি এমন কারখানা এই ধরনের কাজ করে চলেছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে ব্যানার ও পতাকার। যেগুলির উৎপাদন খরচ এবং দামের ফারাক (মার্জিন) খুব কম হলেও বিক্রির পরিমাণ বিপুল। দিন-রাত এক করে কাজ করতে পারলে ভাল ব্যবসা নিশ্চিত। কোনও কোনও কারখানাকে দিনে লক্ষাধিক পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন তৈরি করতে হয়।
দিল্লির সদর বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গুলশন খুরানার দাবি, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে সারা দেশের ব্যবসায়ীদের হাতে রাজনৈতিক পণ্যের যে বরাত আসে, তার মাধ্যমে প্রায় এক কোটি কাজ তৈরি হয়। খুরানা প্রায় পাঁচ দশক ব্যবসা করছেন। তাঁর অভিজ্ঞ চোখ বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় এ বার ব্যবসার পরিমাণ প্রায় ৩০% বাড়বে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, কয়েক দিনের মধ্যে রঙবেরঙের ব্যানার-ফেস্টুনে কার্যত মোড়কবন্দি হবে দেশ। শুধু কাপড়ের তৈরি পণ্য নয়, নির্বাচনী ইস্তাহার, পোস্টার, চাঁদার বিল, কুপন, লিফলেটকে কেন্দ্র করে ছাপাখানা ব্যবসার কর্মকাণ্ড বাড়বে উল্লেখযোগ্য ভাবে। এমনকি পণ্যের পাশাপাশি নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে পরিষেবা ক্ষেত্রও। যেমন, নির্বাচনী জনসভার সভার জন্য ডেকরেটর, মাইক থেকে শুরু করে হেলিকপ্টার ভাড়া দেওয়ার সংস্থাগুলি। সকলেরই চোখ রাজনৈতিক দলগুলির দিকে।