BFSI

ঋণ পুনর্গঠনের অপব্যবহার হবে না তো! উঠছে প্রশ্নও

বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য আশ্বাস, আগের গলদ সংশোধন করে এ বারের ঋণ পুনর্গঠনের রূপরেখা শক্তপোক্ত করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যক্তি ও সংস্থা— অতিমারির জেরে আর্থিক ভাবে বিপাকে পড়েছে দু’পক্ষই। ব্যাঙ্কিং মহলের আশঙ্কা, ঋণ শোধের ক্ষমতা কমায় এর ফলে মাথা তুলতে পারে অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ)। যা আটকাতে ব্যাঙ্কগুলিকে এককালীন ঋণ পুনর্গঠনের অনুমতি দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বুধবার বণিকসভা সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এক ওয়েবিনারে ব্যাঙ্কিং মহল জানিয়েছে, এই পুনর্গঠন প্রকল্পে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প, বাড়ি-গাড়ি এবং ব্যক্তিগত ঋণকেই বেশি গুরুত্ব দেবে তারা। ফলে শুধু রোজগারে টান পড়া ব্যক্তি বা ব্যবসারই সুরাহা হবে তা নয়, হিসেবের খাতা পরিষ্কার রাখতে পারবে ব্যাঙ্ক নিজেও। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের অন্য অংশের প্রশ্ন, এই সুযোগে উল্টে ব্যাঙ্কের পুঁজির অপব্যবহার হবে না তো? পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়বে না তো বেনোজল? সে দিকে নজরদারি না-বাড়ালে তো আসল উদ্দেশ্যই মাটি!

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য আশ্বাস, আগের গলদ সংশোধন করে এ বারের ঋণ পুনর্গঠনের রূপরেখা শক্তপোক্ত করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

স্টেট ব্যাঙ্কের এমডি দীনেশ খারা সম্প্রতি ঋণ পুনর্গঠনের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, প্রয়োজন ছাড়াই কেউ এর সুযোগ নিতে চাইছেন কি না, সে দিকে নজরদারি না-থাকলে মুশকিল। তবে এ দিন ইন্ডিয়ান ওভারসিজ় ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও পার্থপ্রতিম সেনগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘আগে যে কোনও ঋণকেই পুনর্গঠন প্রকল্পের আওতায় আনা যেত। কিন্তু এ বারের শুধু সেই সব ঋণই সুবিধা পাবে, যেগুলিতে করোনার কারণে শোধের সমস্যা হচ্ছে। তাই এই প্রক্রিয়া সময় বেঁধে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।’’ ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর মৃণাল ভট্টাচার্যের যুক্তি, সংস্থা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা হবে তাদের ভবিষ্যতের আয়ের সম্ভাবনা। ফলে ঝুঁকি কমবে।

Advertisement

প্রসঙ্গ পুনর্গঠন

• করোনার সময়ে এনপিএ মাথা তোলার আশঙ্কা কমাতে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ পুনর্গঠনের অনুমতি দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

• ঋণ শোধে সমস্যা হলে পুনর্গঠনের আর্জি জানাতে পারে সংস্থা বা ব্যক্তি।

• আবেদন মঞ্জুর হলে সুদ- মেয়াদের শর্ত বদলে ফের চালু হয় ঋণ শোধ।

• ব্যাঙ্ক ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে শর্ত বদলাতে পারে।

পক্ষে যুক্তি

• ঋণগ্রহীতা এবং ব্যাঙ্ক উভয়েই উপকৃত হবে।

• ব্যাঙ্কের এনপিএ মাথা তোলা অনেকটা আটকানো যাবে।

প্রশ্ন যেখানে

• ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে কেউ তার অপব্যবহার করবে না তো?

• যাঁদের প্রয়োজন নেই, তাঁরাও যদি সুবিধা নিতে চান?

আশ্বাস

• কড়া নজর থাকবে ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায়।

• প্রকল্প চালুর আগে ব্যাঙ্কের পর্ষদকে দিয়ে অনুমোদন করাতে হবে।

• ১ মার্চের হিসেবে ৩০ দিনের বেশি বকেয়া থাকলে সুবিধা মিলবে না।

• ১০০ কোটি টাকার বেশি কর্পোরেট ঋণের ক্ষেত্রে রেটিং থাকতেই হবে।

• পুনর্গঠিত ঋণ শোধের ক্ষেত্রে বাড়তি সর্বোচ্চ দু’বছর সময় পাওয়া যাবে।

• পুনর্গঠনের সুবিধা পাওয়া যাবে এক বারই।

তবে শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্সের ভাইস চেয়ারম্যান সুনীল কানোরিয়ার বক্তব্য, পুনর্গঠনের অপব্যবহার আটকাতে সময়-সহ নানা শর্ত এতটাই কঠোর করা হয়েছে, তাতে প্রয়োজন হলেও অনেকেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement