—প্রতীকী চিত্র।
ঋণগ্রস্ত ও দেউলিয়া সংস্থার পুনর্গঠন এবং ব্যাঙ্ক-সহ ঋণদাতা সংস্থাগুলির বকেয়ার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে তৈরি হয়েছিল দেউলিয়া বিধি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নির্ধারিত প্রাথমিক সময়সীমার (২৭০ দিন) মধ্যে অধিকাংশ মামলার নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ বছর সময় লাগার নজিরও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনাল (এনসিএলটি) এবং তার আপিল ট্রাইবুনালে (এনসিএলএটি) বিচারক ও কর্মীর অপ্রতুলতা অন্যতম কারণ।
এনসিএলটি সূত্রের তথ্য, প্রায় ৬৭% মামলার প্রক্রিয়া ২৭০ দিনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হয়নি। আবার দেউলিয়া বিধি পর্ষদের (আইবিবিআই) জুন-সেপ্টেম্বরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আর্থিক সংস্থার বকেয়া মেটানো সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলি কার্যকর করতে গড়ে সময় লাগছে ৬৫৯ দিন। বাকি পাওনাদারদের ক্ষেত্রে তা ৬৬২ দিন।
কলকাতার দেউলিয়া বিধি ট্রাইবুনালের পরিস্থিতি সম্পর্কে শনিবার হাই কোর্ট ও এনসিএলটির আইনজীবী উজ্জয়িনী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখানে এনসিএলটির দু’টি বেঞ্চ রয়েছে। দীর্ঘ দু’বছর সেখানে দু’জন বিচারপতি ছিলেন। এর ফলে দিনের প্রথমার্ধে একটি বেঞ্চে শুনানি হত। দ্বিতীয়ার্ধে অন্যটিতে। স্বাভাবিক ভাবেই বহু মামলা জমে রয়েছে। তবে মাস ছয়েক হল আরও দু’জন বিচারপতি কলকাতায় নিযুক্ত হয়েছেন। এখন মামলায় আগের তুলনায় গতি এসেছে।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, দেউলিয়া সংস্থাগুলির পুনরুজ্জীবন অথবা গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশি সময় লাগার ফলে সম্পদের মূল্যও কমছে। ফলে পাওনাদার সংস্থাগুলি বকেয়ার তুলনায় অনেক কম টাকা পাচ্ছে। আইআইবিআইয়ের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দেউলিয়া বিধি চালু হওয়ার পর থেকে গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৭০৫৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ২০০০টি মামলা এখনও ঝুলে। নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলি থেকে পাওনাদারেরা ফেরত পেয়েছে ৩.১৬ লক্ষ কোটি টাকা।
এখন সারা দেশে এনসিএলটির বিভিন্ন বেঞ্চ মিলিয়ে ৫৫ জন বিচারপতি রয়েছেন। অথচ ৬৩ জনকে নিয়োগের অনুমোদন রয়েছে। তবে আশার খবর, মামলায় গতি আনতে এনসিএলটিতে বিচারপতির সংখ্যা বাড়িয়ে ১৬৩ এবং এনসিএলএটিতে ২০ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছ কেন্দ্র।