ফাইল চিত্র।
শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানই যে তাঁর সরকারের পাখির চোখ, তা তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে স্পষ্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সে জন্য সুনির্দিষ্ট জমি নীতি জরুরি, মনে করেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা থেকে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণ করেই শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকে মমতা স্পষ্ট করলেন, জমি নীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আনছে তাঁর সরকার। সরকারের উদ্বৃত্ত জমি লিজ় দেওয়ার বদলে ‘ফ্রি-হোল্ড’ দেওয়া হবে।
অভিজ্ঞ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এর ফলে হাতে আসা জমি যে কোনও কাজে লাগানো যাবে। মমতা বলেন, ‘‘আমাদের অনেক জমি পড়ে আছে। সেগুলো নিলাম করব। শিল্প, শপিং মল যে যেমন কিছু তৈরি করুক, সেটা তাদের ব্যাপার। নীতি করা হবে, লিজ় জমি না করে ফ্রি-হোল্ড করে দেব। হয়তো একটু বেশি টাকা দিতে হবে। কিন্তু এখানে-ওখানে ঘুরতে হবে না।’’ কেএমডিএ, আসানসোল দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মতো স্থানীয় প্রশাসনগুলির আওতায় থাকা জমিগুলির ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে।
রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আলিপুরের ১০৮ একর জমিতে নগরায়ন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এলাকাটিকে ছ’টি জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘হেরিটেজ এবং সংগ্রহশালা বাদে বাকি অংশে উন্নয়ন হবে। এখন চারটি জ়োনের নিলাম প্রক্রিয়া চলছে, ১৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।’’ পরে মুখ্যসচিব জানান, দুর্গাপুরের ডিপিএল-এ উদ্বৃত্ত জমি ৩০০ একর। সেখানে শিল্প তালুক হবে। আবাসন তৈরির সুযোগ রয়েছে। রফতানির জন্যেও পদক্ষেপ চলছে।
শিল্পমহলের সাহায্য চেয়ে মমতার দাবি, ‘‘ডেউচা পাঁচামি নিয়ে বিরোধিতা করেছে, আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম স্তরেই ভাল মানের কয়লা মিলেছে। ১২,০০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে। লক্ষ লোকের চাকরি হবে। তাজপুর বন্দরে টেন্ডার হয়েছে। লগ্নি হবে ১২,০০০ কোটি। কে পাবে ঠিক নেই, দ্রুত চূড়ান্ত হবে। আদানিরাও এ রাজ্যে আগ্রহী। সিলিকন ভ্যালিতে জমি ভরে যাচ্ছে।’’
মমতার ঘোষণা, নয়াচরে ১১০০ একরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প হবে। রাণীগঞ্জে শেল গ্যাস মিলেছে। ২২ হাজার কোটি লগ্নি হবে। চর্মনগরীতে কর্মরত ২ লক্ষ ১০ হাজার। সেখানে ১০০ একরে ফুটওয়্যার পার্ক হবে। উন্নয়ন হবে ২০০ একরে। তাঁর কথায়, ‘‘দেশে ৪৫% বেকারত্ব বেড়েছে, রাজ্যে কমেছে ৪৫%। অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করার চেষ্টা চলছে। কোচবিহার, মালদহ, বালুরঘাট বিমানবন্দরের কাজ অনেক এগিয়েছে। হাসিমারা, পুরুলিয়ায় কাজ শুরু হবে। যে ভাবে আপনারা ১০ বছর ধরে বিজিবিএস-এর মাধ্যমে সহযোগিতা করেছেন, তাতে ধন্যবাদ। রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল। সেটা ফেরানো গিয়েছে।’’