প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
গত সোমবার অযোধ্যায় রামলালার মূর্তির ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র দিনেই সারা দেশের এক কোটি গৃহস্থ বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানান, এই লক্ষ্যে তাঁর সরকার ‘সূর্যোদয় যোজনা’ এনেছে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই ঘোষণাকে ‘জুমলা’ বলে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বের বিভিন্ন নথি উল্লেখ করে তাঁর দাবি, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে গত ১০ বছরে ১০ লক্ষ বাড়ির ছাদেও সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বসানো যায়নি। ‘ব্যর্থ’ হওয়ার পরে বরং তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রকল্পের সময়সীমা।
রামমন্দিরের উদ্বোধন করে রামকে শক্তির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এক্স-এ লিখেছিলেন, ‘‘সূর্যবংশী শ্রীরামের আলোয় ভক্তকূল আলো পান। অযোধ্যার এই শুভ দিনে আমি চাই দেশের মানুষের বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছে যাক।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, অযোধ্যার কর্মসূচিকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রধানমন্ত্রী যে সুদূরপ্রসারী বার্তা দিতে পারেন, সে প্রত্যাশা ছিলই। সে দিক থেকে দেখতে গেলে তিনি তাঁর অনুগামীদের হতাশ করেননি। তবে একই প্রসঙ্গে বিরোধীদের আক্রমণেরও জবাব দিতে হতে পারে তাঁর দলকে।
মঙ্গলবার খড়্গে লিখেছেন, ‘‘এক কোটি বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানোর নতুন লক্ষ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাস্তব হল, বিজেপির শাসনকালে গত ১০ বছরে ১০ লক্ষ বাড়িতেও তা করা যায়নি। এর আগে মোদী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ২০২২ সালের মধ্যে ছাদে মোট ৪০ গিগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়া হবে। আদতে তার ৭০ শতাংশই পূরণ করা যায়নি। এর মধ্যে ২.২ গিগাওয়াট লাগানো হয়েছে বাড়িতে। সেখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ মোট উৎপাদনের এক-পঞ্চমাংশ।’’ খড়্গের আরও দাবি, ‘‘এই বিপুল ব্যর্থতার পরে মোদী সরকার প্রকল্পের সময়সীমা বদল করে ২০২৬ সাল করে। যদিও নতুন বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয়নি। ভোটের মরসুম মানেই বিজেপির জুমলার মরসুম!’’
উল্লেখ্য, দেশে জ্বালানি আমদানির খরচ ও দূষণ কমাতে বিকল্প বিদ্যুতে জোর দেওয়া শুরু করেছে কেন্দ্র। সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ, গ্রিন হাইড্রোজেন ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিতে চাইছে তারা।