ছবি রয়টার্স।
অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলাতে গত মার্চ থেকে মোট ১১৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের বৈঠক শেষে ঋণনীতি ঘোষণায় ফের সুদ কমে কি না, তা দেখার অপেক্ষায় ছিল সারা দেশ। সকলকে অবাক করে সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানাল, পিছোনো হচ্ছে ঋণনীতি কমিটির বৈঠকই। নতুন দিন পরে জানানো হবে। এই খবর সামনে আসতেই উঠছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশাও বাড়াচ্ছে চিন্তা।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক বৈঠক পিছোনোর কারণ না-জানালেও, সূত্রের খবর ছ’সদস্যের কমিটিতে স্বাধীন সদস্যদের মেয়াদ ফুরিয়েছে গত মাসে। সেই জায়গায় নতুন করে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। তাই আলোচনায় বসতে পারছে না তারা। বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন, অর্থনীতি যখন এতটা দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে, তখন ঋণনীতি কমিটির এত গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়ে কেন আগে সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্র। বিরোধী কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, এটা তো ‘দৈব দুর্বিপাক’ নয়। দ্রুত নিয়োগের ক্ষমতাও রয়েছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাতে। অবিলম্বে যেন তা করা হয়। উল্লেখ্য, করোনা ‘দৈব দুর্বিপাক’ দাবি করেই জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেছিলেন নির্মলা।
কমিটিতে ছ’জন সদস্যের মধ্যে তিন জন শীর্ষ ব্যাঙ্কের। বাকি তিন স্বাধীন সদস্য নিয়োগ করে কেন্দ্র। ২০১৬ সালে প্রথম কমিটি তৈরি হয়। গত মাসে তিন স্বাধীন সদস্য চেতন ঘাটে, রবীন্দ্র ঢোলাকিয়া ও পামি দুয়ার মেয়াদ ফুরিয়েছে। বছরের শুরুতেই নতুন সদস্য খুঁজতে ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে শক্তিকান্ত ও আর্থিক বিষয়ক সচিবকে নিয়ে প্যানেল তৈরি হলেও, এখনও পর্যন্ত কোনও নিয়োগ হয়নি।
নিয়ম অনুসারে, কমিটির বৈঠকে কমপক্ষে চার জন সদস্যকে থাকতেই হয়। তার এক জন গভর্নর বা ডেপুটি গভর্নর হতে হয়। ফলে বৈঠকে বসতে পারছে না তারা। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, মেয়াদ যে শেষ বা তাঁদের ফের নিয়োগ করা যাবে না, তা জানাই ছিল। তা হলে কেন এত দিনে নতুন নিয়োগ হল না? অর্থনীতির উদ্বেগের মধ্যে কেন এ ভাবে আরও একটা সঙ্কট তৈরি করা হল? উত্তর দেবে সময়ই।