গত বছর অক্টোবরে ইলন মাস্কের হাতে টুইটার যাওয়ার পর থেকে মেসেজিং অ্যাপটিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করেছে একের পর এক সংস্থা। ফাইল ছবি।
গত বছর অক্টোবরে ইলন মাস্কের হাতে টুইটার যাওয়ার পর থেকে মেসেজিং অ্যাপটিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করেছে একের পর এক সংস্থা। তাদের ফিরিয়ে আনাই লিন্ডা ইয়াকারিনোর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যাঁকে সংস্থার নতুন সিইও নিযুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছেন টেস্লা কর্ণধার।
নিজেকে বাক্-স্বাধীনতার প্রবক্তা হিসেবে বহু দিন ধরেই দাবি করেন মাস্ক। টুইটারেরও সকলে যাতে নিজের ইচ্ছামতো বার্তা দিতে পারেন, তার জন্য সওয়াল করেন তিনি। বিশেষত, তাঁর মেসেজিং অ্যাপটি কেনার পিছনেও তা অন্যতম কারণ। কিন্তু সকলকে বার্তার সমানাধিকার দিতে গিয়ে ঘৃণা ভাষণকেও প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন মহলের। সেই সংশয় থেকে ক্রেতা হারাতে নারাজ বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাগুলি সিদ্ধান্ত নেয় টুইটার থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার। মাস কয়েক আগে তারা ফিরে এসেছে বলে মাস্ক দাবি করলেও, কোনও বিস্তারিত তথ্য দেননি। এই পরিস্থিতিতে কয়েক সপ্তাহ আগে মায়ামিতে মাস্কের সাক্ষাৎকার নেন ইয়াকারিনো। সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন রাত তিনটের সময়ে তিনি টুইট করেন। টেস্লা কর্ণধারের ক্ষেত্রেও টুইটারে তাঁর চালু করা নিয়ম প্রযোজ্য হবে কি না ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ইয়াকারিনোর এই সরাসরি প্রশ্নই তাঁর সম্পর্কে মাস্ককে উৎসাহিত করেছে। বিশেষত, টুইটারে ব্লু টিক দিতে মাস্ক মাসে মাসে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছেন ঠিকই। কিন্তু সংস্থার অর্থ জোগাড়ের অন্যতম মাধ্যম যে বিজ্ঞাপন, তা এখনও স্থিতিশীল হয়নি। তাই বর্তমানে সংস্থা যে জায়গায় রয়েছে, তাতে এ বার সত্যি সত্যিই টুইটারে বিজ্ঞাপনদাতাদের আস্থা ফেরানোর পথে হাঁটতে হবে সংস্থাকে। এ দিকে, লিন্ডার কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই জগতে কাজের। সংস্থার মন বুঝে নিত্যনতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে তাদের নেট জগতে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এর আগে এনবিসি-ইউনিভার্সালে কাজের সময়ে ইয়াকারিনোর দল এনেছিল প্রায় ১০,০০০ কোটি ডলারের বিজ্ঞাপন। ফলে টুইটারে তাঁর সেই দক্ষতা কাজে লাগবে।
টেস্লা কর্ণধার নিজেও বলেছেন, এক্স কর্প-এর (টুইটারের বর্তমান নাম) ব্যবসায়িক দিকটা সামলাবেন লিন্ডা। আর তিনি যুক্ত থাকবেন পণ্য এবং নতুন প্রযুক্তি আনার কাজের। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, যে ভাবে মাস্ক নিজের ইচ্ছামতো সংস্থা চালাতে অভ্যস্ত, তাতে নতুন সিইও-র সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার বিরোধ তৈরি হওয়াও অসম্ভব নয়। যার এক ঝলক মায়ামির সাক্ষাৎকারেই দেখা গিয়েছে। মূলত বিজ্ঞাপনদাতাদের ইচ্ছা এবং টুইটারের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের থাকার প্রশ্নে। ফলে টুইটার কোন পথে এগোয়, সে দিকেই তাকিয়ে তারা।