—প্রতীকী চিত্র
জীবন বিমা নিগমকে (এলআইসি) দিয়ে অনুৎপাদক সম্পদের ভারে জর্জরিত আইডিবিআই ব্যাঙ্ক কেনানোর পরে কেন্দ্রের দিকে সমালোচনা ধেয়ে এসেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। প্রশ্ন উঠেছিল কোটি কোটি জীবন বিমা গ্রাহকের আমানতকে ‘ঝুঁকির মুখে’ ঠেলে দেওয়া নিয়ে। যদিও ঝুঁকি এখানেই শেষ হচ্ছে না। এলআইসির আর্থিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে সংস্থার অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩০,০০০ কোটি টাকা। মোট পুঁজির প্রায় ৬.১%। গত পাঁচ বছরে এনপিএ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের ব্যাখ্যা, এলআইসি যে শুধু সরকারি ঋণপত্রে পুঁজি ঢালে বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও ব্যাঙ্কে লগ্নি করে, তা নয়। মেয়াদি ঋণ ও অপরিবর্তনযোগ্য ডিবেঞ্চারের মাধ্যমে পুঁজি দেয় বেসরকারি সংস্থাকেও। সাম্প্রতিক কালে এই ধরনের বহু সংস্থার ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। হয়েছে ঋণ খেলাপি। কয়েকটি গিয়েছে দেউলিয়া বিধির আওতায়। ফলে অন্যান্য ব্যাঙ্কের মতোই এলআইসির এনপিএ-ও মাথাচাড়া দিয়েছে। আর তাই রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন মাথাব্যথা।
সমস্যা যেখানে খেলাপি কারা
• পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে এলআইসির এনপিএ। • অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে সেই অঙ্ক ৩০,০০০ কোটি টাকা। • এনপিএ-র জন্য সংস্থান করতে হয়েছে বড় অঙ্কের পুঁজি ডেকান ক্রনিক্যাল, এসার পোর্ট, গ্যামন, আইএল অ্যান্ড এফএস, ভূষণ পাওয়ার, ভিডিয়োকন, অলোক ইন্ডাস্ট্রিজ়, এবিজি শিপইয়ার্ড, ইউনিটেক, জিভিকে পাওয়ার।
উদ্বেগের কারণ কী? অনেকে বলছেন, আগে এনপিএ-কে মোটামুটি ২ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখার দক্ষতা দেখাত এলআইসি। কিন্তু গত ক’বছরে তা ক্রমাগত বেড়েছে। ঠিক যে ভাবে বেড়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্কের মতো বেসরকারি ব্যাঙ্কের এনপিএ। একটা সময় পর্যন্ত সম্পদের গুণমানের ব্যাপারে যাদের সুনাম ছিল। এনপিএ মোকাবিলায় সম্প্রতি বড় পুঁজির সংস্থান করতে হয়েছে এলআইসি-কে।
সংস্থা এনপিএ
এলআইসি ৬.১
ইয়েস ব্যাঙ্ক ৭.৩৯
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ৬.৩৭
অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ৫.০৩
তাঁদের মতে, আইএল অ্যান্ড এফএস, ভিডিয়োকন, ভূষণ পাওয়ার-সহ এমন বহু সংস্থায় এলআইসির ঋণ আটকে রয়েছে, যেখান থেকে সিংহভাগ পুঁজিই ফেরত আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। একাংশ হয়তো মুছে দিতে হতে পারে হিসেবের খাতা থেকেও।