সন্তোষ গঙ্গোয়ার। —ফাইল চিত্র
কেন্দ্রের প্রস্তাবিত শ্রম বিধিতে কর্মীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু সুবিধা তুলে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে বার বারই অভিযোগ করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। এ নিয়ে ৮ জানুয়ারি দেশ জুড়ে ধর্মঘটও ডেকেছে তারা। বৃহস্পতিবার শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ারের সঙ্গে বৈঠকে সরাসরি সেই ক্ষোভের কথাই জানাল সংগঠনগুলি।
প্রস্তাবিত শ্রম বিধি, কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা ও এমপ্লয়িজ স্টেট ইনশিওরেন্স-সহ (ইএসআই) আরও কিছু আইন বদল নিয়ে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী। সেখানে ধর্মঘট না-করার বিষয়টি তাদের ভেবে দেখতে বলেছেন গঙ্গোয়ার। যদিও নিজেদের দাবিতে অনড় বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। তাদের দাবি, নতুন আইনে বর্তমানে চালু সুবিধা বজায় রাখুক কেন্দ্র। ভাবা হোক সেগুলি আরও বাড়ানোর কথাও।
সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন এবং এআইইউটিইউসির কেন্দ্রীয় নেতা রমেশ পরাশর অভিযোগ করেন, ‘‘বর্তমান আইনে সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত যে সব সুবিধা শ্রমিকরা পান, তার সিংহভাগই নতুন বিধি চালুর নামে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। তাই প্রায় সবক’টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমমন্ত্রীর কাছে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।’’
এআইইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘যে সব সুবিধা রয়েছে, ভবিষ্যতেও সেগুলি পাওয়া যাবে কি না, তা ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ’ ঠিক করবেন বলে প্রস্তাবিত বিধিতে বলা হয়েছে। ওই সব সুবিধা তুলতে এখন আইন বদলানো জরুরি। কিন্তু নতুন বিধি চালু হলে তার আর প্রয়োজন হবে না। তথাকথিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষই তা পাল্টে দিতে পারবেন।’’
ইউনিয়নের নেতারা জানান, ইএসআই প্রকল্পের মাধ্যমে কম বেতনের কর্মীরা নিখরচায় চিকিৎসার সুযোগ পান। এই প্রকল্পকে সামাজিক সুরক্ষা শ্রমবিধির মধ্যে মেশানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্র ওই প্রকল্পে শ্রমিক ও নিয়োগকারীর দেয় টাকার অঙ্ক কমিয়েছে। বলেছে, কর্মীরা চাইলে ইএসআইয়ের সদস্য না-ও হতে পারেন। ইউনিয়নগুলির আশঙ্কা, এতে চাকরি দেওয়ার সময়েই সংশ্লিষ্ট কর্মী প্রকল্পে থাকতে চান না বলে অনেক নিয়োগকারীই লিখে দিতে বাধ্য করতে পারেন। তাদের অভিযোগ, প্রকল্পটির গুরুত্ব কমাতেই এটা করা হয়েছে।
তার উপরে কেন্দ্র বলেছে, কর্মীরা চাইলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের পেনশন প্রকল্প ছেড়ে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে নাম লেখাতে পারেন। নেতাদের অভিযোগ, কর্মচারীদের যাতে নির্দিষ্ট হারে পেনশন দিতে না-হয়, সেই লক্ষ্যেই ওই পদক্ষেপ।