—প্রতীকী ছবি।
ফের বিস্ফোরক হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এ বার আমেরিকার লেনদেনকারী সংস্থাটির দাবি, আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ কাণ্ডে তাদেরকে কারণ দর্শানোর (শোকজ়) নোটিস পাঠিয়েছে ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। চেষ্টা করছে দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার। কিন্তু সেখানে বলেনি কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক এবং তাদের ব্রোকারেজ সংস্থার নাম। যারা কি না আদানিদের সংস্থার শেয়ার দরের পতনের সুযোগ নিয়ে লেনদেন করার জন্য বিশেষ লগ্নিকারীর হয়ে বিদেশে তহবিল পরিচালনার কাজ করেছিল।
গত বছর জানুয়ারিতে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থায় এক দশক ধরে শেয়ার দরে কারচুপি হয়েছিল বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল হিন্ডেনবার্গ। সেখানে তুলে ধরা হয় গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির নাম। বিদেশ থেকে ঘুরপথে আদানির সংস্থাগুলিতে তহবিল ঢুকেছিল বলেও অভিযোগ করে তারা। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেবি-কে তদন্তের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার হিন্ডেবার্গের দাবি, সেই কাণ্ডেই ৪৬ পাতার ওই নোটিসে সেবি অভিযোগ করেছে যে, আদানিদের সংস্থার শেয়ারে দামের পতনকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা করেছিল আমেরিকার সংস্থাটি। এর স্বপক্ষে হিন্ডেনবার্গের গ্রাহক কিংডন ক্যাপিটালের সঙ্গে কোটাক ফান্ডের কর্তাদের কথাকে তুলে ধরে ধরেছে সেবি। বলেছে, কিংডনের মুনাফা হয়েছিল ১৮৩.২৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রকটির দাবি, রিপোর্টে আদানিদের সম্পর্কে সত্যি কথা জানায়নি হিন্ডেনবার্গ। বরং উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেছে।
হিন্ডেনবার্গ নিজেদের মুনাফার কথা স্বীকার করলেও, জানিয়েছে তার অঙ্ক ছিল ৪০ লক্ষ ডলার (প্রায় ৩৩.৪ কোটি টাকা)। শেয়ার দর পড়বে ধরে নিয়েই তারা লগ্নি করেছিল। সেই কথা গোপনও রাখা হয়নি। কিন্তু কোটাক কখনওই হিন্ডেনবার্গের হয়ে কাজ করেনি। সেবি-র তীব্র সমালোচনা করে তাদের তোপ, ওই নোটিস ‘অর্থহীন’। ভয় দেখানোর জন্য পাঠানো। বরং মূল অভিযোগগুলি এড়িয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেছে হিন্ডেনবার্গ।
সেই সঙ্গে লেনদেনকারী সংস্থাটির প্রশ্ন, ‘‘সেবি কোটাকের নাম নিচ্ছে না কেন? পুরো নাম নেওয়ার বদলে শুধু কে-ইন্ডিয়া অপারচুনিটি ফান্ডের কথা উল্লেখ করেছে। সংস্থা হিসেবে লেখা হয়েছে কেএমআইএল-এর কথা। যাদের পুরো নাম কোটাক মহিন্দ্রা ইনভেস্টমেন্ট। উদয় কোটাক, যিনি ২০১৭ সালে সেবির সংস্থা পরিচালনা সংক্রান্ত কমিটির প্রধান ছিলেন, তাঁকে বা তাঁর সংস্থার পর্ষদে থাকা ব্যক্তিদের আড়াল করতেই এই সিদ্ধান্ত? হতে পারে ভারতের আরও এক জন শক্তিশালী ব্যক্তির আর্থিক প্রতারণা ফাঁস করার চেষ্টা করছে, এমন সংস্থাকে চুপ করানোই তার লক্ষ্য। যে কাজটা সেবি ভাল মতোই করে।’’
কেএমআইএলের অবশ্য দাবি, তারা লগ্নিকারীদের কেওয়াইসি যাচাই করেই গ্রাহক নেয়। আইন মেনে করা হয় সব লগ্নিও। হিন্ডেনবার্গ কখনওই তাদের গ্রাহক ছিল না। তবে আজ এই খবরে কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের শেয়ার দর পড়ে গিয়েছে প্রায় ২%।