ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর আগে পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট রাতারাতি বাতিল ঘোষণা করে মোদী সরকার জানিয়েছিল, কালো টাকা আটকানোর পাশাপাশি বাজারে নগদ কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোই এই পদক্ষেপের লক্ষ্য। কিন্তু সম্প্রতি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যে উঠে এসেছে, এই সময়ের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারে বেড়ে চলেছে কাগুজে নোটও। ফলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রকে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, কোভিড পরিস্থিতি ব্যতিক্রমী। অনিশ্চিত অবস্থায় মানুষের নগদের উপর নির্ভরতা বাড়ে। অতিমারিকালে তা ঘটেছে সারা বিশ্বেই। তবে নোটবন্দির পরে ডিজিটাল লেনদেনও যে রকম বাড়ছে, তা নিশ্চিত ভাবে ভবিষ্যতে নোট নির্ভরতা কমাবে।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, লেনদেনের দ্রুততম মাধ্যম হল ব্যাঙ্ক নোট। সেই কারণে অনিশ্চয়তায় ভরা সময়ে মানুষ যে এই সম্পদকেই সবচেয়ে বেশি হাতে রাখতে চাইবেন, সেটা প্রত্যাশিত। পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতি আমেরিকায় ২০২০ সালে বাজারে মুদ্রার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২.০৭ লক্ষ কোটি ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় ১৬% বেশি। ১৯৪৫ সালের পরে সে দেশে নোটের এমন বৃদ্ধি আর হয়নি।
সরকারি সূত্রের আরও বক্তব্য, বাজারে থাকা ব্যাঙ্ক নোটের হার কেমন তা দেশের জিডিপির উপরেও নির্ভর করে। গত দশকে জিডিপির নিরিখে ওই হার ছিল ১১%-১২%। গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) তা ১৪.৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। মানুষের নগদের চাহিদার পাশাপাশি, গত বছর অর্থনীতির সঙ্কোচন এর অন্যতম কারণ। কিন্তু একই সঙ্গে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল লেনদেনও। সেই তালিকায় রয়েছে কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং এবং ইউপিআই লেনদেন।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে সরকার নিজেও ক্রমাগত দাবি করে চলেছে। তা হলে সঙ্কোচনের খাদ থেকে বেরিয়ে আসার পরেও নগদ বৃদ্ধির এই রমরমার কারণ কী? তা ছাড়া কালো টাকা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্যও নগদ কমা জরুরি বলে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখন নোট এত বাড়ার পর সেই লক্ষ্য পূরণের কী হল সেই ব্যাখ্যাও মেলেনি।