বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। -ফাইল ছবি।
বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি বা আরসেপ)’-চুক্তিতে সই করলে হিতে বিপরীত হত, এমনটাই মনে করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর মতে, ওই চুক্তিতে এমন সব শর্ত ছিল যা মেনে চলতে হলে ভারতের অর্থনীতির উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ত। অনলাইনে ‘সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি স্টাডিজ’ আয়োজিত এক আলোচনায় বুধবার এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রজোট ‘আসিয়ান’-এর সদস্য ১০টি দেশকে নিয়ে আরসেপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে গত রবিবার। ১৫টি দেশের এই চুক্তি খাতায়কলমে বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল হয়ে ওঠার ভিত গড়েছে। যদিও চুক্তির শর্ত নিয়ে মতবিরোধের কারণে গত বছরই এই চুক্তিতে সই না করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত, এ ব্যাপারে টানা সাত বছর আলাপ আলোচনার পরেও।
চুক্তির কোন কোন শর্ত নিয়ে ভারত সন্তুষ্ট হতে পারেনি তা-ও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। সেই শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে চুক্তিবদ্ধ দেশগুলিতে ভারতের রফতানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব, ওই দেশগুলির পণ্যবাজারে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত আশ্বাসের অভাব এবং চুক্তিবদ্ধ কয়েকটি দেশের অভ্যন্তরীণ কয়েকটি আইন। জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ভারত সাত বছর ধরে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সব মতবিরোধ দূর করার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ মাসুল চড়া, দুর্গাপুরে সরছে মিকি মেটালস
আরও পড়ুন: ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম আপাত মন্দা, জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘যদি বহু ক্ষেত্রে তা আমাদের উপকারে না আসে তা হলে সেই চুক্তিতে সই করার কোনও অর্থ হয় না।’’
তবে ইউরোপীয় জোটের (ইইউ) দেশগুলির সঙ্গে ভারত যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করতে আগ্রহী, সে কথাও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। যদিও তাঁর কথায়, ‘‘সেই চুক্তি হতে হবে নিঃশর্ত এবং ভারসাম্য রক্ষাকারী।’’
জয়শঙ্কর এও বলেছেন, ‘‘ইইউ জোটের দেশগুলির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সই করার কাজটাও খুব সহজ হবে না। তবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তা বেশ কার্যকরী হবে। আমাদের প্রত্যাশা অনেকটাই মিটবে।’’