—প্রতীকী ছবি।
এক মাসে গায়েব ৭৯ লক্ষ গ্রাহক! বছরের শেষে এসে বড় ধাক্কা খেলেন দেশের ধনীতম শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী। তাঁর টেলি পরিষেবা সংস্থা ‘রিলায়্যান্স জিয়ো’র থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন উপভোক্তারা। শুল্ক বৃদ্ধির কারণে গ্রাহকদের একটা বড় অংশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘বিএসএনএল’-এর দিকে ঝুঁকছেন বলে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি টেলি পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলির গ্রাহক সংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে তাঁদের নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ বা ট্রাই। সেখানে বলা হয়েছে, এ বছরের (পড়ুন ২০২৪) সেপ্টেম্বরে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি মোট এক কোটি গ্রাহক হারিয়েছেন। এই তালিকার একেবারে প্রথমেই নাম রয়েছে রিলায়্যান্স জিয়োর।
ট্রাইয়ের দেওয়া অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে মুকেশ অম্বানীর সংস্থার পরিষেবা নেওয়া বন্ধ করেছেন ৭৯ লক্ষ গ্রাহক। সুনীল মিত্তল পরিচালিত ‘ভারতী এয়ারটেল’-এর ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ১৪ লক্ষ। আর ১৫ লক্ষ গ্রাহক কমেছে ভোডাফোন-আইডিয়ার (ভিআই)।
বেসরকারি সংস্থাগুলির উপভোক্তা কমার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিএসএনএলের গ্রাহক সংখ্যা। এ বছরের জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৫৫ লক্ষ নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা। মূলত খরচ কম হওয়ার কারণেই তাঁরা বিএসএনএলকে পছন্দ করছেন বলে রিপোর্টে স্পষ্ট করেছে ট্রাই।
কেন্দ্রের টেলি যোগাযোগ দফতরের তথ্য বলছে, এ বছরের জুলাইতে বেসরকারি সংস্থা ছেড়ে বিএসএনএলে স্থানান্তরিত হয় ১৫ লক্ষ গ্রাহক। অগস্টে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১ লক্ষ। যা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে অক্ষুণ্ণ ছিল। এই দুই মাসে যথাক্রমে ১১ লক্ষ ও সাত লক্ষ গ্রাহক অন্য পরিষেবা ছেড়ে শুরু করেছেন বিএসএনএল ব্যবহার।
চলতি বছরের জুনে শুল্ক বৃদ্ধি করে অধিকাংশ বেসরকারি টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। তার পর থেকে ব্যবহারকারীদের মনোভাবের উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। শুল্ক বৃদ্ধির আগে বিএসএনএল ছেড়ে বেসরকারি সংস্থাটির পরিষেবা গ্রহণের প্রবণতা ছিল বেশি। জুনের পর থেকে সেই চাকা উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করেছে।
টেলি যোগাযোগ দফতর জানিয়েছে, এ বছরের জুলাইতে বিএসএনএল ছেড়েছেন মাত্র ৩ লক্ষ ১০ হাজার গ্রাহক। অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৬০ ও ২ লক্ষ ৮০। কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেছেন, ‘‘ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিএসএনএলের বিরাট সুযোগ রয়েছে।’’ অন্য দিকে বেসরকারি কোম্পানিগুলির মতো নিকট ভবিষ্যতে শুল্ক বৃদ্ধির কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবার্ট রাভি।