করোনা ও চড়া দামের জেরে ধাক্কা খেয়েছে সোনার ব্যবসা। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের কারিগরদের তৈরি হাল্কা সোনার গয়না বিশ্বের বাজারে বিশেষ ভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু সেই গয়নার সিংহভাগই এখানকার বিক্রেতাদের রফতানি করতে হয় মুম্বই, চেন্নাই-সহ আরও কিছু রাজ্যের রফতানিকারীদের মাধ্যমে। যার ফলে মুনাফার একটা বড় অংশই হাত ছাড়া হয়ে যায় রাজ্যের গয়না ব্যবসায়ীদের। শিল্প মহলের মতে, বিশ্বের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের অভাবেই এই লোকসান স্বীকার করতে হচ্ছে তাঁদের। সেই পরিস্থিতিই এ বার বদলাতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। এ জন্য কলকাতায় ‘বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল জুয়েলারি শো’ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটি এবং বড়বাজার জেম অ্যান্ড জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের পাইকারি গয়নার ক্রেতাদের। লক্ষ্য, রাজ্যের কারিগরদের হাতের কাজ তুলে ধরে গয়নার আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র স্থাপন করা।
গত কয়েক বছরে করোনা ও চড়া দামের জেরে ধাক্কা খেয়েছে সোনার ব্যবসা। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, তার মধ্যেও ২০২১-২২ সালে রাজ্য থেকে ৯৯.৩০ কোটি ডলারের গয়না রফতানি হয়েছে। সারা দেশ থেকে দামী পাথর এবং গয়না রফতানির অঙ্ক প্রায় ৫০০০ কোটি ডলার বলে জানান জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়রাম্যান আশিস পেথে। তিনি বলেন, “রফতানির পরিমাণ ১০,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কেন্দ্র। গয়না ব্যবসায়ীরাও সেই লক্ষ্য সমানে রেখেই নিজেদের প্রস্তুত করছেন।’’
কলকাতায় মিলন মেলায় চলা ওই প্রদর্শনীতে আমেরিকা, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী-সহ প্রায় ৯টি দেশের ২০০-র বেশি ক্রেতা যোগ দিয়েছেন বলে দাবি বাবলুবাবুর। আজই প্রদর্শনীর শেষ দিন। দুবাইয়ের গয়নার পাইকারি ব্যবসায়ী জ়ারা জুয়েলারির প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের কারিগরদের হাতের কাজ করা হাল্কা সোনার গয়নার খুব ভাল চাহিদা রয়েছে আমাদের দেশে। এই প্রদর্শনীতে এসে রাজ্যের গয়না রফতানিকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পেরে আমি খুশি।’’ এই যোগাযোগ পশ্চিমবঙ্গের গয়না শিল্পের কাছেও ভাল সুযোগ এনে দেবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।