ফাইল চিত্র।
আবার ভারতের আকাশে ডানা মেলতে পারে জেট এয়ারওয়েজ়।
জেটের ফিরে আসা নিয়ে দেশ জুড়ে তুঙ্গে জল্পনা। ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল শেষ বার যে সংস্থার যাত্রী বিমান পাড়ি দিয়েছিল আকাশে।
প্রায় ৮০০০ কোটি টাকা ধারে ধুঁকতে থাকা জেটকে বিক্রির জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। বিমান মন্ত্রক সূত্রের খবর, আবেদনে সাড়া দিয়েছে বেশ কিছু সংস্থা। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনাও চলেছে। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে কথা চলছে কয়েকটি সংস্থা মিলিয়ে তৈরি দু’টি গোষ্ঠীর সঙ্গে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী মাসেই জেটের তরফে সুখবর পাওয়ার আশা।
তবে অনেকের প্রশ্ন, করোনার ধাক্কায় বিশ্ব জুড়েই যখন বিমান পরিষেবা বেহাল, তখন যে-ই জেট কিনুক না-কেন, উড়ান শুরু হলেও বা লাভ কতটা হবে? উল্টে সংস্থা চালানোর খরচ সামলাতে গিয়ে আরও ক্ষতির মুখে পড়বে না তো তারা?
আরও পড়ুন: নিঃশব্দে তৈরি হচ্ছে নতুন ভাষা।
কারণ, গত বছর ১৭ এপ্রিল জেট বন্ধ হওয়ার পরে বলা হয়েছিল, নরেশ গয়ালের সংস্থার হাতে অর্থ নেই।
বিপুল লোকসানে চলছে। কর্মীদের বেতন দেওয়া অসম্ভব। ভাড়ায় নেওয়া বিমানগুলি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকেই ফেরত পাঠানো হচ্ছিল।
সংস্থা সূত্রের অবশ্য দাবি, জেটের হাতে রয়ে যায় ১০টি বিমান। চারটি নিজস্ব। আর বাকি ছ’টি কেনার জন্য তখনও পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। জুলাইয়ে বান্দ্রায় একটি সম্পত্তি বিক্রি করে সেই বকেয়া মেটানো হয়েছে। হাতে এসেছে ওই ছ’টি বিমানের মালিকানা। এখনও হাজার চারেক কর্মী রয়ে গিয়েছেন সংস্থায়, যাঁরা অন্য চাকরি নেননি বা পাননি। বেতন না-পেলেও, জেটের ফের আকাশে ডানা মেলার অপেক্ষায় তাঁরা।
জানা গিয়েছে, প্রায় ৫০ জন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়মিত বেতন দিয়ে রাখা আছে। তাঁরা ওই ১০টি বিমান রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছেন। সংস্থার দাবি, মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিসেই সেগুলি উড়তে পারবে। বিমানগুলি হয় মুম্বই নয় দিল্লিতে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র অবশ্য বলছে, সমস্যা একটাই। ১০টি বিমানের মধ্যে বোয়িং ৭৭৭ ছ’টি, এয়ারবাস ৩৩০ দু’টি। অর্থাৎ আটটিই দূরপাল্লার বিমান। আন্তর্জাতিক বড় রুটে চলে। ফলে জেট আবার দেশে উড়ান চালাতে শুরু করলে ছোট বিমান ভাড়া নিতে হবে।
আরও পড়ুন: রানওয়ে ছোঁয়নি আইএক্স-১৩৪৪, বিপদসঙ্কেতও দেননি পাইলট
একাংশের প্রশ্ন, বন্ধ উড়ান সংস্থার এতজন ইঞ্জিনিয়ারকে বেতন দিচ্ছে কে? কোথা থেকে আসছে টাকা? সংস্থার সূত্র বলছে, গয়াল এখনও জেটের চেয়ারম্যান থাকলেও, মালিকানা তাঁর হাতে নেই। ১৭টি ব্যাঙ্ক নিয়ে গঠিত ঋণদাতাদের গোষ্ঠী জেটের পুনরুজ্জীবনের জন্য কলকাতার একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। ব্যাঙ্কের টাকাতেই ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন হচ্ছে। জেটের সমস্ত সম্পত্তির হিসেবও তৈরি হয়েছে। শহরের এই সংস্থাই উৎসাহী ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।
জেট এয়ার কিনতে চেয়ে প্রথমে আরব আমিরশাহির এতিহাদের মতো কিছু উড়ান সংস্থা উৎসাহ দেখালেও, পরে তারা পিছিয়ে যায়। খবর, শেষমেশ যে দু’টি গোষ্ঠী কিনতে এগিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে কোনও উড়ান সংস্থা নেই। তবে বিমান পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা রয়েছে।
বিমান মন্ত্রক সূত্রের খবর, উড়ান সংস্থা চালাতে গেলে যে লাইসেন্স লাগে, তা এখনও রয়েছে জেটের। পরিষেবা দিতে শুধু নতুন করে বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে উড়ান চালানোর সময় বা স্লট কিনতে হবে।