প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের বাজেয়াপ্ত করা কাঁচা পাট কিনে তা বিনা মুনাফায় চটকলগুলিকে বিক্রি করবে জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (জেসিআই)। ফলে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কম দামেই তা পাবে চটকলগুলি। রাজ্যের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের বাজেয়াপ্ত করা ওই কাঁচা পাট এখন রয়েছে জেলাশাসকদের জিম্মায়। জেসিআই জানিয়েছে, অবিলম্বে ওই পাট কেনা শুরু হবে। এই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে শস্য কেনাবেচা করবে জেসিআই। প্রক্রিয়াটি যাতে মসৃণ ভাবে চালানো যায়, তার জন্য তাদের চিঠি দিয়েছে রাজ্যের শ্রম দফতর।
গত বছর করোনা ও আমপানের ফলে পাট চাষ ধাক্কা খেলেও এ বার উৎপাদন ভালই হয়েছে। তার বেআইনি মজুতদারি যাতে বন্ধ করা যায় সেই উদ্দেশ্যে কুইন্টাল প্রতি কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৬৫০০ টাকা করেছে জুট কমিশনারের দফতর তথা কেন্দ্র। কিন্তু চটকল মালিকদের অভিযোগ, তাতেও বেআইনি মজুতদারি ঠেকানো যায়নি। বস্তা তৈরির প্রধান উপকরণ কাঁচা পাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০০০-৭৩০০ টাকায়। সেই দামে চলকলগুলি তা কিনলেও শস্য রাখার বস্তার জন্য কেন্দ্র তাদের দাম দিচ্ছে ৬৫০০ টাকা হিসাবের ভিত্তিতেই। কাঁচা পাটের অভাবে ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১২টি চটকল বন্ধ হয়েছে। কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ৪৫,০০০ শ্রমিক। সোমবারই বন্ধ হয়েছে হুগলির চাঁপদানির নর্থব্রুক জুটমিল। সেখানে কাজ করেন প্রায় ৪০০০ কর্মী। চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে বন্ধ হতে পারে আরও কারখানা। অনেক মিলে ছাঁটা হয়েছে কাজের ‘শিফট’।
আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘জুট কমিশনারের বেঁধে দেওয়া দামে কাঁচা পাট খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। কালোবাজার থেকে পাট কিনে বস্তা তৈরি করতে গেলে লোকসান গুনতে হচ্ছে চটকল মালিকদের। চটকল বন্ধের সেটা একটা বড় কারণ।’’
এই পরিস্থিতিতে বেআইনি ভাবে মজুত করা কাঁচা পাট উদ্ধারের জন্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিরেক্টর জেনারেল গঙ্গেশ্বর প্রসাদ সিংহ জানান, ‘‘আমরা প্রায় ৮৪০০ কুইন্টাল কাঁচা পাট উদ্ধার করেছি। বেআইনি মজুতদারির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণও শুরু হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নির্ধারিত কাঁচা পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৪৫০০ টাকা। ওই দামেই তা কিনবে জেসিআই। পরিবহণ-সহ অন্যান্য খরচ যোগ করে বিনা মুনাফায় তা বিক্রি করা হবে চটচকল মালিকদের কাছে।