করোনার থাবায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল খুচরো ব্যবসা। প্রতীকী ছবি।
কোভিডের আঁধার পেরিয়ে চলতি বছরে ধীরে ধীরে ঘুরছিল খুচরো ব্যবসার চাকা। উৎসবের মরসুমে তাতে আরও গতি এসেছে। ছাপিয়েছে প্রাক-করোনা পর্বের ব্যবসাকেও। খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) দাবি, চড়া মূল্যবৃদ্ধি আশঙ্কার মেঘ তৈরি করলেও ক্রেতাদের মধ্যে কেনাকাটার আগ্রহ যথেষ্ট। তবে সংশয়কে দূরে ঠেলে খুচরো ব্যবসার পুনরুজ্জীবন টানা বহাল থাকবে কি না, তা বুঝতে দু’তিন মাস সময় লাগবে।
করোনার থাবায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল খুচরো ব্যবসা। সংক্রমণ রুখতে প্রথমে লকডাউন, তার পরে স্থানীয় ও বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিধিনিষেধ তার ঘুরে দাঁড়ানোর পথকে কঠিন করে তোলে। তবে বৃহস্পতিবার কলকাতায় আরএআইয়ের সম্মেলনের ফাঁকে সংগঠনের সিইও কুমার রাজাগোপালন জানান, অক্টোবরের হিসাবে ২০১৯ সালের তুলনায় এ বার ব্যবসা বৃদ্ধির হার ১৯%। আর এপ্রিল-অক্টোবরের হিসাবে বেড়েছে প্রায় ২০%। তাঁর কথায়, ‘‘ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আগ্রহী। উৎসবের মরসুমে প্রায় সবক’টি ক্ষেত্রেই ব্যবসা বেড়েছে। আসবাবপত্র, বাসন ইত্যাদি ঘরোয়া পণ্যের চাহিদা কম ছিল।’’
ভারতের বিরাট বাজার, পণ্য কেনার আগ্রহ বৃদ্ধি ইত্যাদিকে হাতিয়ার করে আগামী দিনে বিক্রি আরও বৃদ্ধির আশায় দিন গুনছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই পথে আশঙ্কা এখন একটাই— মূল্যবৃদ্ধি। রাজাগোপালন বলেন, ‘‘ব্যবসা বৃদ্ধির ধারা কতটা বজায় থাকবে, তা বোঝা যাবে আগামী দু’তিন মাসে। এই সময় বিয়ের মরসুম। বড়দিন, নববর্ষের মতো উৎসব-অনুষ্ঠানও রয়েছে। শীতে আশা করছি গরম পোশাকের চাহিদা বাড়বে। মূল্যবৃদ্ধির হার যদি আর না বাড়ে, তা হলে আগামী দিনেও ব্যবসা বৃদ্ধির গতি বহাল থাকবে বলেই আশা করছি।’’
এ দিন সম্মেলনে স্পেনসার্স রিটেলের কর্তা শাশ্বত গোয়েন্কাও খুচরো ব্যবসায় গতি আসার কথা বলেন। তাঁর আশা, বছরে ব্যবসা গড়ে ৯%-১০% বেড়ে ২০৩০ সালে ২ লক্ষ কোটি ডলারের (প্রায় ১,৬৩,৪৮,০০০ কোটি টাকা) সীমা ছাড়াবে।
রাজাগোপালনের বক্তব্য, চড়া মূল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্ত ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা কিছুটা কমিয়েছে। তাঁরা জরুরি নয়, এমন পণ্য আগের থেকে খানিকটা কম কিনছেন। তবে উচ্চবিত্তমহলে তেমন খামতি চোখে পড়েনি। যদিও শুধু এটুকু থেকে আর্থিক বৈষম্য বৃদ্ধির সহজ সূত্র তৈরি করা ঠিক নয় বলে মনে করেন তিনি। সব মিলিয়ে ব্যবসার ধারাবাহিকতা অটুট থাক, এখন সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন তাঁরা।