অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে।—ছবি সংগৃহীত।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফর্মুলা অনুসারে রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানো কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয় বলে আর্থিক বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানিয়েছেন অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে। সওয়াল করেছেন ফর্মুলা বদলেরও। এই খবর সামনে আসতেই শুরু হয়েছে হইচই। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, শেষ পর্যন্ত এটা হলে করোনায় ধাক্কা খাওয়া অর্থনীতিতে রাজ্যগুলি সমস্যায় পড়বে। মঙ্গলবারই পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রিত সিংহ বাদল বলেছিলেন, এখনও এপ্রিল-জুলাইয়ের ক্ষতিপূরণ পাওয়া বাকি। আর বুধবার কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক মন্তব্যকে তুলোধনা করে বলেছেন, ‘‘খবর কানে এসেছে। এটা ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সমান’।’’ তাঁর দাবি, জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হোক।
জিএসটি চালুর সময়ে ২০১৫-১৬ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে বছরে কর আদায় ১৪% করে বাড়বে ধরা হয়েছিল। কেন্দ্র বলেছিল, তা না-হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি মেটাবে তারা। ২০১৭ সালের ১ জুলাই জিএসটি আসে। সেই অনুসারে ২০২১-২২ সাল পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। সোমবার অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে এই খাতে রাজ্যগুলিকে ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ সালে তা ছিল যথাক্রমে ৪১,১৪৬ কোটি ও ৬৯,২৭৫ কোটি।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে করোনার কারণে কেন্দ্রের আয় কত কমেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই মন্তব্য করেন পাণ্ডে। প্রতিবাদ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘জিএসটি আইনেই বলা আছে, রাজস্ব আদায় নির্দিষ্ট সীমার নীচে নামলে ক্ষতিপূরণের ফর্মুলা বদলানো যাবে।’’ উল্লেখ্য, ফর্মুলা নিয়ে আলোচনার জন্য জুলাইয়ে পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও, তা বাতিল হয়। তবে অনেকের মতে, এ নিয়ে কেন্দ্রের অন্দরে যে ভাবনাচিন্তা অনেকটাই এগিয়েছে, তা স্পষ্ট পাণ্ডের কথায়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ার মানে, সেসের আয় নিজের কাছে রাখবে কেন্দ্র। এতে তাদের হাতে টাকা থাকলেও, রাজ্যগুলির ভাঁড়ারে টান পড়বে। অথচ তাদেরও কর আদায় কমেছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ যে রাজ্যগুলির পরের বছর বিধানসভা ভোট, তাদের ক্ষেত্রে নির্বাচনেও প্রভাব পড়তে পারে।