ফাইল চিত্র।
গত সেপ্টেম্বরের ৭.৪১% থেকে অক্টোবরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ৬.৭৭ শতাংশে। ১৮ মাস পরে ১০ শতাংশের নীচে নেমে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৮.৪%। আমেরিকায় সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধির হার নামার খবরে তেতে উঠেছিল শেয়ার বাজার। আশা করা হচ্ছিল, এ দেশেও তা মাথা নামালে ফের সেনসেক্স ৬২ হাজারের মাইলফলক পেরোতে পারে।বাস্তবে হলও তা-ই। বুধবার এক সময় সূচক ৬২,০৫২-এ ওঠে। পরে নেমে এলেও পা ছিল উচ্চতার নতুন শিখরে (৬১,৯৮০.৭২)। পরের দু’দিন কমার পরে সপ্তাহ শেষ করে ৬১,৬৬৩ অঙ্কে। নিফ্টি ছিল ১৮,৩০৮।
যদিও লগ্নিকারীদের আশঙ্কা কাটছে না। খুচরো মূল্যবৃদ্ধি এখনও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬% সহনসীমার উপরে। ফলে ডিসেম্বরে আরও একদফা সুদ বাড়াতে পারে আরবিআই। সুদ বৃদ্ধি মানেই শিল্পের খরচ বৃদ্ধি। লগ্নিতে ধাক্কা। চাহিদায় চোট। সব মিলিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির গোড়ায় আঘাত লাগা। যদিও অনুমান, আগের বারের ৫০ বেসিস পয়েন্টের জায়গায় এ বার সুদ বাড়তে পারে ৩৫ বেসিস পয়েন্ট। তার উপরে গত জুলাইতে মূল্যবৃদ্ধি কমলেও, পরের দু’মাসে ফের চড়ে যায়। এই ঘটনা পুনরাবৃত্তির আশঙ্কাও রয়েছে।
ঋণে সুদ বাড়লে তা ফের কিছুটা বাড়তে পারে ব্যাঙ্ক জমাতেও। এতদিন ঋণের চাহিদা যে অনুপাতে বেড়েছে, সেই অনুপাতে বাড়েনি আমানতের সুদ। হালে পুঁজি জোগাড়ের জন্য গ্রাহকের আমানত টানতে ব্যাঙ্কগুলি সেই হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঋণের চাহিদা যেখানে ১৭.৯% বেড়েছে, সেখানে ব্যাঙ্ক আমানত বেড়েছে ৯.৬%। জমা বাড়ানো নিয়ে গত সপ্তাহে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস ব্যাঙ্কগুলির শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মনে করা হচ্ছে, যত দিন পর্যন্ত চাহিদা মতো ঋণ দিতে আমানতের ঘাটতি না মিটছে, তত দিন ব্যাঙ্কে জমা টাকায় সুদ চড়া থাকবে।
ভারতের মতো আমদানিকারীদেশের জন্য ভাল খবর, অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮৭.৭৪ ডলারে নামা। তবে দেশে পেট্রল-ডিজ়েল বেশ ক’মাস ধরে অপরিবর্তিত।
অভ্যন্তরীণ জোগান ঠিক রাখতে ইস্পাতে রফতানি কর বসিয়েছিল কেন্দ্র। এর জেরে গত ছ’মাসে ইস্পাত রফতানি কমে ৫৩% হয়। চুপসে যায় ইস্পাত সংস্থাগুলির বিক্রি এবং লাভ। ২২ মে বসানো ওই কর গত সপ্তাহের শেষে তুলে নেওয়া হয়েছে। আজ এর সদর্থক প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।
ক্রমাগত নামার পরে ৭ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ১৪৭২ কোটি ডলার বেড়ে পৌঁছেছে ৫৪,৪৭২ কোটিতে। তবে সর্বোচ্চ জায়গা থেকে তা বেশ নীচে। অক্টোবরে রফতানির ১৬.৬% কমে ২৯৭৮ কোটি ডলারে নামাও চিন্তার বিষয়। প্রায় দু’বছর পরে রফতানি সঙ্কুচিত হল। পশ্চিমের দেশগুলিতে মন্দা ভাব দেখা দেওয়াই এর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
(মতামত ব্যক্তিগত)