প্রতীকী ছবি।
খাদ্যপণ্যের দাম আগুন। মূলত তার প্রভাবেই মার্চে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছে গিয়েছে ৬.৯৫ শতাংশে। এই নিয়ে টানা তিন মাস সেই হার রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার উপরে। বিভিন্ন পণ্য এবং কাঁচামালের দামের যা পরিস্থিতি, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির হার ওই সীমার নীচে নামার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়ে দেওয়া হল স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার রিপোর্টে। সেখানে পূর্বাভাস, ওই হার আরও বেড়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ শতাংশের উপরে থাকতে পারে। অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে তা কিছুটা নেমে আসতে পারে ৬.৫ শতাংশের আশেপাশে। খাদ্যপণ্যের দামের চাপ আপাতত সাধারণ মানুষকে ভোগাবে। এই অবস্থায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আগামী দু’টি ঋণনীতিতে সুদের হার বৃদ্ধি কার্যত অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে করছেন স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদেরা। এক দিন আগে যে সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার।
উল্লেখ্য, ওয়াকিবহাল মহলের বড় অংশেরই ব্যাখ্যা, মার্চে মূল্যবৃদ্ধির হার এতটা লাফালেও পেট্রল-ডিজ়েলের দামের প্রভাব এখনও তার উপরে ততটা পড়েনি। তা টের পাওয়া যেতে পারে এপ্রিলের পরিসংখ্যানে।
গত মাসের মূল্যবৃদ্ধিকে মূলত ঠেলে তুলেছে গম, প্রোটিন (বিশেষ করে মুরগির মাংস), দুধ, পরিশোধিত তেল, আলু, লঙ্কা, জ্বালানি কাঠ এবং রান্নার গ্যাসের দাম। খাদ্যপণ্যের দামের উপরে চাপ আরও বাড়িয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সরবরাহ ব্যবস্থার বিঘ্নিত হওয়া। যেমন, ইউক্রেন থেকে মুরগির খাবারের আমদানি ধাক্কা খেয়েছে। তাতে মাথা তুলেছে ওই পণ্যের দাম। মাংসের দামে তার প্রভাব পড়েছে। বদলাতে হচ্ছে সূর্যমুখী তেলের বাণিজ্য নীতি। রিপোর্টে দাবি, ২০২১ সালের অক্টোবরের পর থেকে মূল্যবৃদ্ধির হিসাবের ক্ষেত্রে পেট্রল-ডিজ়েলের প্রভাব কমেছে। বেড়েছে কেরোসিন এবং জ্বালানি কাঠের। অদূর ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরও বাড়তে পারে। যা গ্রামীণ এলাকার চহিদার পক্ষে ভাল খবর নয়।
কৃষি ক্ষেত্রের কাঁচামালের দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে চাষের খরচ ৮%-১০% বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে রিপোর্টে। সে ক্ষেত্রে কৃষিপণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের হিসাবেও তার প্রভাব পড়তে পারে। তা বাড়তে পারে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। সব মিলিয়ে মূল্যবৃদ্ধি যে জায়গায় পৌঁছতে চলেছে তাতে লাগাম টানতে জুন এবং অগস্টের ঋণনীতিতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে সুদ বাড়াতে হতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে। সারা অর্থবর্ষে তা বাড়তে পারে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট। চড়া দরের বাজারে এর ফলে জমায় আয় কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশা করছেন সুদ নির্ভর মানুষ।