প্রতীকী ছবি।
করোনার মধ্যে বেড়েছে জীবন এবং স্বাস্থ্য বিমার প্রয়োজনীয়তা। মানুষ এতে আগ্রহীও হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন বাজেটে জীবন বিমার প্রিমিয়ামে কর ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানোর আর্জি জানাল বিমা সংস্থাগুলি। সুপারিশ করা হয়েছে সাধারণ বিমায় জিএসটি-র হার কমানোরও। আরও বেশি মানুষকে বিমার আওতায় আনতেই এই প্রস্তাব। পাশাপাশি উঠেছে বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ার দাবিও।
এখন আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোট ১.৫০ লক্ষ টাকা লগ্নির উপরে যে আয়কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়, সেই তালিকাতেই রয়েছে জীবন বিমার প্রিমিয়াম। বিমা সংস্থাগুলি চায়, কর ছাড়ের আওতায় প্রিমিয়ামের অঙ্ক বাড়ানোর জন্য ৮০সি ধারায় লগ্নির অঙ্কের পরিমাণও বাড়ানো হোক। সে ক্ষেত্রে ওই ধারায় আলাদা করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রিমিয়ামে আয়কর ছাড়ের দাবি জানিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য বিমা-সহ সাধারণ বিমায় জিএসটি-র হার ১৮% থেকে কমিয়ে ৫% করার আর্জিও জানিয়েছে বিমা শিল্প। বজাজ অ্যালায়্যাঞ্জ জেনারেল ইনশিয়োরেন্সের এমডি-সিইও তপন সিঙ্ঘলের মতে, বিশেষত স্বাস্থ্য বিমায় ১৮% জিএসটি থাকায় প্রিমিয়ামের অঙ্ক বেড়ে যায় অনেকটাই। ফলে অনেক ক্ষেত্রে বেশি অঙ্কের পলিসি করাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন গ্রাহকেরা। অথচ বর্তমানে করোনার মধ্যে আরও বেশি মানুষকে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনায় জোর দিচ্ছে বিমা শিল্প এবং গ্রাহকও চাইছেন বিমার অঙ্ক বাড়াতে। যে কারণে এই সুপারিশ করেছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে ৮০ডি ধারায় কর ছাড় মেলে। অতিমারির কথা মাথায় রেখে সেই ছাড়ের অঙ্ক দ্বিগুণ করে ৫০,০০০ টাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন নিভা বুপা হেল্থ ইনশিয়োরেন্সের এমডি-সিইও কৃষ্ণণ রামচন্দ্রন।
উঠেছে বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির রাস্তা আরও প্রশস্ত করার দাবিও। এখন এই শিল্পে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৭৪%। ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরামের বক্তব্য, ভারতে আরও বেশি মানুষকে বিমার আওতায় আনা প্রয়োজন। তার জন্য এই ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ জরুরি। দরকার আরও মূলধনের। সে কারণেই বিদেশি লগ্নি আরও বাড়ানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। চলতি অর্থবর্ষেই বাজারে জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছাড়ার কথা। সেই শেয়ারে যাতে বিদেশি লগ্নি বেশি করে টানা যায়, তা নিশ্চিত করতেও বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া জরুরি বলে মত ফোরামের।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য হাসপাতাল, রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ইত্যাদিকে পরিকাঠামো শিল্পের আওতায় আনার আবেদন জানিয়েছে বিমা সংস্থাগুলি। রিলায়্যান্স জেনারেল ইনশিয়োরেন্সের সিইও রাকেশ জৈনের যুক্তি, পরিকাঠামো শিল্পের আওতায় এলে বিমা সংস্থা-সহ অন্য বড় লগ্নিকারীরা তাতে বিনিয়োগ করতে পারবে।